*/

ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা - ওজন কমানোর সহজ উপায়

ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টিবউপকারিতা জানুন। ব্ল্যাক কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনাল ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুন শরীরের টক্সিন মুক্ত রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। এই আর্টিকেলে পাবেন ব্লাক কফি বানানোর সহজ নিয়ম, ত্বকে কফির উপকারিতা এবং অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেও সঠিক তথ্য। সুস্থ ও ফিট থাকতে প্রতিদিন সঠিকভাবে ব্লাক কফি খাওয়ার নিয়ম জানুন এখনই। 
ব্ল্যাক-কফি-খাওয়ার-২০টি-উপকারিতা


কফি শরীরকে চাঙ্গা করে ও মুড সতেজ রাখে। সাধারণত কফি ব্রিজ ভালোভাবে ভেজে বুড়ো আকারে তৈরি করা হয়, এরপর ফুটন্ত গরম পানিতে কফি পাউডার ও সামান্য চিনি মিশিয়ে সুগন্ধি কফি প্রস্তুত করা হয়। তবে ব্লাড কফি একটু আলাদা - এতে কোন দুধ, ক্রিম বা অতিরিক্ত ফ্লেভার ব্যবহার করা হয় না। এটি কেবলমাত্র কফি গুঁড়ো ও গরম পানি দিয়ে তৈরি হয়, যার ফলে ক্যাফেইনের আসল সাদ অঘ্রাণ পুরোপুরি অক্ষুন্ন থাকে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। 

পেজ সূচিপত্র : ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা 

ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা 

ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা রয়েছে। ব্ল্যাক কফি খাওয়ার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন, যা শরীর এবং মনের উভয়দিকেই সহায়ক। এই উপকারিতা গুলো শুধুমাত্র শরীরকে শক্তি দেয় না বরং এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কফি খাওয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত -
  1. মানসিক শক্তি বৃদ্ধি : ব্ল্যাক কফির কার্যকারী উপকারিতার মধ্যে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি এটি গুরুত্বপূর্ণ। কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন আমাদের মস্তিষ্ক সংক্রান্ত নিউরোট্রান্সমিটার কে ব্লক করে, ফলে এটি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। যার কারণে আমাদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মেজাজ খিটখিটে ভাব দূর হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে চাপ বা উদ্বিগ্নতা কমে বা সামলিয়ে কাজের প্রতি মনোযোগ সৃষ্টি হয়। 
  2. হজম শক্তি বৃদ্ধি : ব্ল্যাক কফি আমাদের পাকস্থলির বিপাকীয় হার ৩ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে আপনি যদি সঠিকভাবে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন তাহলে এটি আমাদের অন্যান্য শারীরিক বেনিফিট এর সাথে সাথে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 
  3. শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি : ব্ল্যাক কফি আমাদের এড্রেনালিন লেভেল বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া আমাদের শরীরের ফ্যাট বা চর্বি এসিডের ক্ষরণ ঘটায়, যার কারনে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি কোষগুলো দূর হয়। ফলে আপনি যদি নিয়মিত ব্লাক কপি কোন প্রকার শারীরিক পরিশ্রমের সময় পান করেন তাহলে প্রাকৃতিকভাবে এটি আপনার শারীরিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে বা এতে উপস্থিত প্রাকৃতিক শক্তি আপনাকে নতুনভাবে কোন কর্ম করার প্রেরণা দিবে। 
  4. লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায় : ব্ল্যাক কফি নিয়মিত ব্যবহার লিভার ক্যান্সার, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, হেপাটাইটিস এবং অ্যালকোহল যুক্ত সিরোসিস প্রতিরোধের সাথে সম্পর্কিত। গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা দিনে চার কাপ কালো কফি পান করেন তাদের যকৃতের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। কারণ ব্লাক কফির গুণগত মান রক্তে উপস্থিত অস্বাস্থ্যকর লিভার এনজাইম এর সংখ্যা কমাতে সাহায্য করবে। 
  5. স্মৃতিশক্তি বাড়ায় : বয়স বাড়ার পারকিসন্স এবং আলতঝাইমারস রোগের কারণে মানুষের স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রতিদিন সকালে একটা ব্রাক কফি মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ঠিক রাখে। ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত ব্লাক কফি খাওয়া হলে তা ৬৫ শতাংশ আলোতঝাইমারস এবং ষাট শতাংশ পর্যন্ত পারকিসন্স হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 
  6. যকৃত সুস্থ রাখে : শরীরের কার্যক্রম পরিচালনায় যকৃতের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্ল্যাক কফি যকৃতের ক্যান্সার, হেপাটাইটিস, ফ্যাট ও অ্যালকোহলের কারণে হওয়া যকৃতের নানান সমস্যার সমাধানের সাহায্য করে। যারা প্রতিদিন চার কাপের বেশি ব্লাক কপি পান করেন তাদের যকৃত জনিত সমস্যা হওয়ার যোগ্য আশি শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। 
  7. ওজন কমাতে সহায়তা করে : শরীরচর্চার কার্যকারিতা বাড়াতে সূর্য করার 30 মিনিট আগে ব্লাক কপি পান করা ভালো। এটা বিপাক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে সাহায্য করে। এটা পেটের মেদ কমাতেও সহায়তা করে। ব্ল্যাক কফিস নায়ক এ উদ্দীপিত করে শরীরের চর্বির কোষ ভেঙ্গে ফেলে এবং গ্লাইকোজেনের এর বিপরীত শক্তির উৎস হিসেবে সংকেত দেয়। 
  8. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : ব্ল্যাক কফি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে, বিশেষ করে যদি এটি সুষুম খাদ্যভাস এবং জীবন যাপনের সাথে সংযুক্ত হয়। নিয়মিত ব্লাড কফি পান করলে হার্ট এটাক এবং স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে পারে। 
  9. পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে : কফিতে মূত্র বর্ধক পানীয়, যার মানে আপনি যত বেশি খাবেন, প্রস্রাব করার প্রবনতা তত বেশি। এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিবার আপনি প্রস্রাব করার সময় রাসায়নিক এবং ব্যাকটেরিয়া আপনার পেট থেকে ধুয়ে ফেলা হয়। এটি আপনার হজম পরিষ্কার করে এবং আপনাকে সাধারণভাবে নিরাপদ রাখে। 
  10. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ : বিভিন্ন ধরনের ফলে তুলনায় ব্লাক কফিতে রয়েছে কয়েক গুণ বেশি আন্টির অক্সিডেন্ট। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারিতা আমরা সকলেই জানি। এর জন্য শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর চাহিদা মেটানোর জন্য আপনি নিয়মিত ভাবে ব্লক কপি পান করতে পারেন। 
  11. ফ্রী রেডিকেল : ব্ল্যাক কফি আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ারকে ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক কফির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। জি আন্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে যে সমস্ত ফ্রি রেডিকেল গুলো থাকে সেগুলোকে ধ্বংস করে এবং আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রকারের ক্রনিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। 
  12. চোখ সুস্থ : ব্ল্যাক কফিতে উপস্থিত রয়েছে ক্লোরোজানির এসিড নামক উপাদান, যা চোখকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
  13. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : ব্ল্যাক কফি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধের সহায়ক। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য বায়োএকটিভ যৌগ শরীরের কোষ গুলিকে ক্ষতিকর ফ্রী রেডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে লিভার ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সারের মতো ক্যান্সারের নির্দিষ্ট ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ব্রাক কপি অত্যন্ত কার্যকর। 
  14. টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় : ব্ল্যাক কফি টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুড়ি কমাতে সহায়ক। কপিতে থাকা ক্যাফেইন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াই এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যারা প্রতিদিন তিন থেকে চার কাপ কপি পান করেন তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত কমে যায়। 
  15. পাকস্থলী পরিষ্কার : নিয়মিত ব্লাড কপি পান করলে এটি আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকারক উপাদান ও ব্যাকটেরিয়া বের করে সাহায্য করে। ফলে পাকস্থলী পরিষ্কার অসুস্থ থাকে আমাদের। 
  16. নিউরো ডিজেনারেটিভ : বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে কিছু মানুষের মধ্যে পার্কিনসন ডিজিজ, অ্যালজাইমার এর মত বেশ কিছু নিউরোলজিক্যাল ডিজেনারেটিভ ডিজিজ দেখতে পাওয়া যায়। তাই যে সমস্ত মানুষরা নিয়মিত ব্লাক কফি পান করেন তাদের মধ্যে এই সমস্ত নিউরো ডিজেনারেটিভ হওয়ার প্রবণতা রকমে এবং এর সাথে সাথে যে সমস্ত মানুষরা অলরেডি সমস্ত সমস্যায় ভুগছেন তারা বেশি উপকার পেতে পারেন। 
  17. বিষন্নতার বিরুদ্ধে লড়াই করে : যারা দিনে চারবার তার বেশি কাপ ব্লাক কফি পান করেন তাদের হতাশাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২০% কম এবং আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা ৫০% কম। এতে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার গুলির কার্যক্ষমতা বাড়ায়, জামেজাজ উন্নত করতে এবং বিশ্বনেতা কমাতে সহায়ক। কফি পান করা আক্ষরিক অর্থে একটি জীবন রক্ষাকারী এবং আমি চাই যে নির্দিষ্ট কারণে আরো বেশি লোক আরো প্রায়শই করবে। 
  18. বাত রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে : যারা দিনে চার কাপের বেশি ব্লাক কপি পান করেন তাদের ভাত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৫৭ পর শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। কফির শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ইনসুলিন ও ইউরিক এসিডের মাত্রা কমিয়ে বাত ও গাউট রোগের ঝুঁকি কমায়। 
  19. মানসিক সতেজতা ও উদ্দীপনা বৃদ্ধি : ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রকে উদযাপিত করে, এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মনোযোগ ও সজাগতা বাড়ায়। 
  20. কম ক্যালরি : ব্ল্যাক কফি দুধ এবং চিনি ছাড়া তৈরি হয়, তাই এটা ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে যা ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। 
সংযম বজায় রেখে ব্লাক কফি পান করলে এসব উপকারিতা উপভোগ করা সম্ভব। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ না করে নিরাপদ মাত্রায় ব্লাক কফি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। 

কফিতে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ ও উপাদান

ব্ল্যাক কফি - প্রতি আট আউন্স (২৪০ মিলি লিটার)
  • ক্যালোরি : প্রায় ২ ক্যালোরি
  • প্রোটিন : ০ গ্রাম 
  • ফ্যাট : ০ গ্রাম 
  • কার্বোহাইড্রেট : ০ গ্রাম 
  • চিনি : ০ গ্রাম 
  • ফাইবার : ০ গ্রাম 
অতিরিক্ত পুষ্টিগুণ 
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : প্রচুর পরিমাণে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে কোষ কে  সুরক্ষা দেয়। 
  • ক্যাফেইন : একটা ব্লাক কপিতে প্রায় ৯৫ মিলিগ্রাম, যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। 
দুধ ও চিনি যুক্ত কফি
  • এক টেবিল চামচ চিনি যোগ করলে - ১৬ ক্যালোরি বৃদ্ধি 
  • ১/৪ কাপ (৬০ মিলিলিটার) পুরো দুধ যোগ করলে - ৩৭ ক্যালোরি বৃদ্ধি

ওজন কমাতে ব্লাক কফি খাওয়ার নিয়ম 

এখন আমরা জানবো ওজন কমাতে ব্লাক কফি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। সঠিক পদ্ধতিতে ব্ল্যাক কফি খাওয়ার নিয়ম জানলে অবশ্যই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। ব্ল্যাক কফিতে উপস্থিত ক্লোরজেনিক এসিড আমাদের শরীর হতে দ্রুত ফ্যাট বা ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করে এবং পুনরায় শরীরে জমাতে বাধা সৃষ্টি করে। এছাড়া বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা ব্ল্যাক কফিতে উপস্থিত শরীরে গ্লুকোজের উৎপাদন হ্রাস করে এবং নতুন ফ্যাটের কোর্সগুলো পুনরায় গঠন হতে বাধা প্রদান করে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ দ্রুত হয়ে যায়। 
এর জন্য অবশ্যই ব্ল্যাক কফি চিনি বাদ দিয়ে খেতে হবে। এছাড়া অবশ্যই ব্লাক কফি সকলের খেতে চাইলে নাস্তা খাওয়ার পরে কিংবা ব্যায়াম করে নাস্তা খেয়ে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পরে ব্লাক কপি পান করবেন। অপরদিকে রাতে কিংবা বিকেলে পান করলেও ভরা পেটে বা খালি পেটে খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়াও চিনিসহকারে ব্ল্যাক কফি খেলে কখনোই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে না। অন্যথায় ডায়াবেটিসহ অন্যান্য রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

ব্ল্যাক কফি বানানোর নিয়ম 

এখন আমরা ব্লাক কফি বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানব। চলুন তাহলে কিভাবে ব্ল্যাক কফি বানানো যায় দেখে নেই -
  • ব্ল্যাক কফি তৈরি একেবারে সহজ এজন্য প্রথমে একটি প্যানে গরম পানি করে নিতে হবে। 
  • এরপর একটি চায়ের কাপে ব্ল্যাক কফি পাউডার ঢেলে এতে ফুটন্ত গরম পানি দিতে হবে। এবার ভালো করে না নিয়ে নিতে হবে। তাহলে তৈরি হয়ে গেল ব্লাক কফি। 
  • এছাড়াও আপনার ইচ্ছা অনুসারে এতে চিনি কিংবা লেবু ব্যবহার করে খেতে পারেন। তবে ব্ল্যাক কফি দিয়ে স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে চাইলে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং যারা ওজন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা এতে লেবু ব্যবহার করতে পারেন। 

ত্বকে কফির উপকারিতা 

ত্বকের যত্নে কফির কিছু উপকারিতা হলো -
  • এক্সফোলিয়েশন : কফির গুড়ো প্রাকৃতিক এক্সপোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। 
  • প্রদাহ হ্রাস : কফিতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের প্রথা ও লালচে ভাব কমাতে সহায়ক। 
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : কফি অ্যান্টি এক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ  যা ত্বকের  কোচ গুলোকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যের প্রক্রিয়াধীন করতে সাহায্য করে। 
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা : কফি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বক কে উজ্জ্বল ও সতেজ করে। 
  • ডার্ক সার্কেল হ্রাস : কফির গুঁড়ো চোখের নিজের ডার্ক সার্কেল কমাতে কার্যকর হতে পারে। 

ব্লাক কফি খাওয়ার অপকারিতা 

যদিও ব্লাক কফির অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্ল্যাক কফি পান করলে কিছু অপকারিতা দেখা দিতে পারে। নিচে কিছু প্রধান অপকারিতা উল্লেখ করা হলো -
  • উদ্বেগ এবং স্নায়বিক ও উত্তেজনা : অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ উদ্বেগ, নার্ভাসনেস এবং স্নায়বিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। 
  • গর্ভবতী মহিলারা বিশেষ করে যারা বাচ্চাদের দুধ পান করাচ্ছেন তাদের ব্ল্যাক কফি খাওয়া মোটেও উচিত নয়। 
  • শিশু, বয়সন্ধিকালীন কিশোররা ও ব্লাক কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। 
  • কি বেশ কিছু গবেষণা দেখা গিয়েছে, যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার এর মত সমস্যা থাকে তাহলে আপনি যদি দিনে এক কাপের বেশি ব্লাক কফি খেয়ে থাকেন আপনার রক্তচাপ অত্যন্ত বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি করতে পারে এই ব্লাক কফি।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ব্লক কফি খেলে অনিদ্রা বা  ইঞ্জোমেনিয়া এর সমস্যার সৃষ্টি করে। 
  • ঘুমের সমস্যা : ক্যাফিন ঘুমের চক্র ব্যাহত করতে পারে, যা নিদ্রাহীনতার কারণ হতে পারে। 
  • পাচন তন্ত্রের সমস্যা : ব্লাড কফি অ্যাসিডিক হওয়ার কারণে পেটে অম্লতা বাড়াতে পারে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পেটে ব্যথা এবং অম্বল সৃষ্টি করতে পারে। 
  • হৃদপিন্ডের সমস্যা : অতিরিক্ত ক্যাফেইন হৃদস্পন্দন বাড়াতে পারে এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 
  • ডিহাইড্রেশন : ব্ল্যাক কফি মূত্র-বর্ধ্য হওয়ার কারণে এটি শরীর থেকে জল নির্গমনের পরিমাণ বাড়িয়ে ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে। 
  • পুষ্টির অভাব : ব্ল্যাক কফি অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে এটি খাদ্য থেকে পুষ্টির শোষণ কমাতে পারে, যা পুষ্টির অভাব সৃষ্ট গ্রহণ করতে পারে। 
এই কারণগুলো বিবেচনা করে সংযমে বজায় রেখে ব্লাক কপি পান করা উচিত। সংযমী পরিমাণে কফি পান করলে এর উপকারিতা উপভোগ করা সম্ভব এবং অপকারিতা এড়ানো যেতে পারে। 

লেখক এর শেষ মন্তব্য : ব্লাক কফি খাওয়ার উপকারিতা

ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা জানলাম এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এ কারণে পরিমাণ মতো কফি খাওয়া উত্তম। অতিরিক্ত কফি খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে এটি খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি পর্যন্ত বিভিন্ন দিক থেকে শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ এবং খালি পেটে কপি পান করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। 

প্রতিদিন কফি পান করা মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশে কফির জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে ব্ল্যাক কফি অনেকেই খায়, সঠিক পদ্ধতি এবং সময় মেনে ব্লাক কপি পান করলে আপনি এর উপকারিতা পাবেন এবং আপনার দৈনন্দিন জীবনে এটি একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন হতে পারে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। আজকে এ পর্যন্তই, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ🥰

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url