*/

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় - বিস্তারিত জানুন

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় জানুন বিস্তারিতভাবে। আজকের আর্টিকেলে জানতে পারবেন ফেসবুক প্রোফাইল, রিলস, গ্রুপ ও ভিডিও থেকে কত টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে। ফেসবুকে লাইক দিয়ে ইনকাম করা যায় কিনা এবং ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা কি হালাল - সব প্রশ্নের উত্তর জানুন আজকের আর্টিকেলে। 
ফেসবুক-পেজ-থেকে-টাকা-ইনকাম-করার-উপায়


বর্তমান যুগে ফেসবুক পেজ থেকে আয় করা সত্যিই অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। এখন ঘরে বসেই ফেসবুকের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে বা বিভিন্ন কনটেন্ট পোস্ট করে আপনি সহজেই ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফেসবুক শুধু বিনোদনের জায়গা নয়, এটি এখন আয়ের একটি বড় মাধ্যমও। চলুন তাহলে জেনে নেই ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে। 

পেজ সূচিপত্র : ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় 

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় 

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়। বর্তমান সময়ে ফেসবুক শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি এখন অনলাইনে আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। অনেকেই মনে করেন, ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করা খুব কঠিন, কিন্তু আসলে বিষয়টি একদমই কঠিন নয়। আপনি যদি নিয়ম-কানুনগুলো ভালোভাবে বুঝে নেন, তাহলে ঘরে বসেই ফেসবুক পেজ থেকে সহজে ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা আছে — কেউ ভালো ভিডিও বানাতে পারে, কেউ গল্প বলতে পারে, কেউ আবার পণ্য প্রচারে দক্ষ। এই প্রতিভাকেই কাজে লাগিয়ে আপনি নিজের ফেসবুক পেজ থেকে নিয়মিত আয় করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে জানবেন, ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় — ধাপে ধাপে সহজ ভাষায়।

  • ইন-স্ট্রিম অ্যাড : ভিডিওর মধ্যে যেসব বিজ্ঞাপন দেখা যায়, সেগুলোকেই ইন-স্ট্রিম অ্যাড বলা হয়। এই ধরনের বিজ্ঞাপন সাধারণ ফিডে দেওয়া বিজ্ঞাপনের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর, কারণ দর্শকরা এটি স্কিপ না করে ভিডিওর অংশ হিসেবেই দেখে। ইন-স্ট্রিম অ্যাড চালানোর জন্য আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে:

  1. পেজে ১০,০০০ বা তার বেশি ফলোয়ার থাকতে হবে
  2. ভিডিওর দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ১ মিনিট হতে হবে
  3. ফেসবুকের সব মনিটাইজেশন নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে

এই শর্তগুলো পূরণ করলে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হবে এবং সেই বিজ্ঞাপন থেকেই আয় শুরু হবে।

  • পেইড সাবস্ক্রিপশন : ফেসবুকে পেইড সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আপনি আপনার পেজে বিশেষ কনটেন্টের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করে দর্শকরা আপনার এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট দেখতে পারবে। এই ফিচারটি সাধারণত ফেসবুক ইনভাইটেশন সিস্টেমের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এটি সক্রিয় করতে হলে নিচের যেকোনো একটি শর্ত পূরণ করতে হবে:

  1. ১০,০০০ ফলোয়ার, অথবা

  2. ২৫০+ রিটার্ন ভিউয়ার, অথবা

  3. ৫০,০০০ পোস্ট এঙ্গেজমেন্ট, অথবা

  4. ১,৮০০,০০০ মিনিট ওয়াচ টাইম

এই শর্তগুলোর যেকোনো একটি পূরণ করলে আপনি পেইড সাবস্ক্রিপশন চালু করতে পারবেন এবং ফলোয়ারদের থেকে আয় করতে পারবেন।

  • ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ : বর্তমানে অনেক কোম্পানি বা ব্র্যান্ড তাদের পণ্য ও সেবা প্রচারের জন্য জনপ্রিয় পেজ বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরের সঙ্গে কাজ করতে চায়। যদি আপনার পেজে ভালো ফলোয়ার, রিচ এবং এনগেজমেন্ট থাকে, তাহলে আপনিও তাদের সঙ্গে স্পন্সরশিপ বা প্রমোশনাল ডিল করতে পারেন। এভাবে আপনি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে ভিডিও বা পোস্ট তৈরি করে আয় করতে পারবেন। ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার আগে তাদের কাছে কোলাবরেশন রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারেন।
  • ফলোয়ারদের কাছ থেকে আয় : ফেসবুক রিলসের মাধ্যমে এখন কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ভালো আয় করতে পারছেন। নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলোয়ার ও ভিউ অর্জন করলে আপনি মাসে ৪,০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। তবে এই সুযোগটি বর্তমানে শুধুমাত্র ইনভাইটেশনের মাধ্যমে পাওয়া যায়। যারা নিয়মিত ভালো মানের ভিডিও তৈরি করেন, তাদের ভবিষ্যতে এই প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  • পেইড ইভেন্ট আয়োজন : আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইন পেইড ইভেন্ট আয়োজন করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। যেমন — অনলাইন ক্লাস, ওয়ার্কশপ, বা ট্রেনিং প্রোগ্রাম। পেইড ইভেন্ট তৈরি করার ধাপগুলো হলো:

  1. আপনার পেজে ফেসবুক ইভেন্ট ফিচার চালু করুন

  2. নতুন ইভেন্ট তৈরি করে ইভেন্টের মূল্য নির্ধারণ করুন

  3. ইভেন্টের সময়, বিবরণ ও হোস্ট তথ্য দিন

এইভাবে আপনি টিকেট বিক্রি করে সরাসরি পেজ থেকেই আয় করতে পারবেন।

  • অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে বিক্রি : যারা ফেসবুকে ব্যবসা করছেন বা করতে চান, তাদের জন্য সোশ্যাল কমার্স একটি দারুণ সুযোগ। এর মাধ্যমে আপনি সরাসরি পেজ থেকে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে:

  1. Facebook Catalog Manager-এ আপনার পণ্য যোগ করুন

  2. পোস্টে পণ্যটির ছবি বা ভিডিও দিন

  3. সেই পোস্টে ক্রয়ের লিংক (Buy Link) যুক্ত করুন

এমনকি আপনি লাইভ স্ট্রিম চলাকালীনও পণ্য লিংক করে বিক্রি করতে পারবেন। এতে ফলোয়াররা সরাসরি আপনার অনলাইন স্টোরে গিয়ে অর্ডার করতে পারবে।

ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম কি হালাল 

বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়া যেমন যোগাযোগের মাধ্যম, তেমনি এটি এখন একটি বড় আয়ের উৎসও হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করা এখন অনেকের জীবিকার অংশ হয়ে গেছে। তবে অনেক মুসলিম ভাই-বোনের মনে একটি প্রশ্ন প্রায়ই জাগে — ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা কি ইসলামিকভাবে হালাল?

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আগে আমাদের বুঝতে হবে, ইসলাম ধর্মে আয়ের মূলনীতি কী এবং ফেসবুকের মাধ্যমে আয় করার পদ্ধতি সে মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না।

  • ইসলাম ধর্মে হালাল আয়ের মূলনীতি 

ইসলাম ধর্মে আয়ের উৎস তখনই হালাল হয়, যখন তা ন্যায়সংগত, প্রতারণামুক্ত এবং হারাম বিষয়বস্তু থেকে মুক্ত থাকে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন -“হে মানুষ! তোমরা হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করো যা আমি তোমাদের জন্য রিজিক হিসেবে দিয়েছি।” - সূরা আল-বাকারা (২:১৬৮)

অর্থাৎ, যদি কোনো আয় এমন উৎস থেকে আসে যেখানে অন্যায়, মিথ্যা, প্রতারণা বা অশ্লীলতা জড়িত থাকে — তাহলে তা হারাম। আর যদি আয়টি সৎ পথে হয় এবং তাতে হারাম কিছু না থাকে, তাহলে তা পুরোপুরি হালাল।

  • ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম কখন হালাল 

আপনি যদি ফেসবুক পেজে এমন কনটেন্ট তৈরি করেন যা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ, এবং তাতে কোনো অশ্লীল, মিথ্যা বা ক্ষতিকর বিষয় না থাকে — তাহলে সেই ইনকাম হালাল গণ্য হবে। উদাহরণস্বরূপ —

  1. আপনি যদি ইসলামিক ভিডিও, শিক্ষামূলক কনটেন্ট, ধর্মীয় উপদেশ, উপকারী টিপস বা বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যপূর্ণ কনটেন্ট তৈরি করেন,

  2. এবং সেটি থেকে বিজ্ঞাপন বা মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয় করেন,

তাহলে সেই আয় সম্পূর্ণ হালাল ইনকাম হিসেবে গণ্য হবে। ইসলামে হালাল উপায়ে মানুষের উপকারে আসা কনটেন্ট তৈরি করা একটি সওয়াবের কাজও হতে পারে।

  • ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম কখন হারাম 

অন্যদিকে, যদি আপনার পেজের কনটেন্টে থাকে—

  1. অশ্লীল দৃশ্য বা কথা,

  2. মিথ্যা তথ্য,

  3. গীবত, অপবাদ, বা অন্যকে কষ্ট দেয় এমন বিষয়,

  4. কিংবা হারাম কোনো কার্যক্রম প্রচার করে এমন ভিডিও,

তাহলে সে ক্ষেত্রে ফেসবুক থেকে পাওয়া ইনকাম ইসলামিকভাবে হারাম হবে। কারণ সেই আয় এসেছে এমন উৎস থেকে যা আল্লাহর নির্দেশের বিরোধী। ইসলাম ধর্মে কোনো হারাম কাজের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ গ্রহণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

  • ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরামর্শ 

যদি আপনি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আয়ের পথে থাকেন, তাহলে নিচের কিছু বিষয় মনে রাখুন —

  1. আপনার প্রতিটি কনটেন্ট যেন হালাল ও উপকারী হয়।

  2. ভিডিওতে অশ্লীল বা বিতর্কিত কিছু যেন না থাকে।

  3. বিজ্ঞাপন বা প্রমোশন করার সময় দেখুন, পণ্য বা ব্র্যান্ডটি হালাল কিনা

  4. আপনার উদ্দেশ্য যেন শুধুমাত্র টাকা উপার্জন নয়, বরং মানুষের উপকারে আসা কনটেন্ট তৈরি করা হয়।

সবশেষে বলা যায়, ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম ইসলামিকভাবে হালাল, যদি সেই কনটেন্ট ও উপার্জনের উৎস হারাম না হয়। আপনার তৈরি করা ভিডিও বা পোস্ট যদি হালাল বিষয়বস্তু নিয়ে হয়, এবং তাতে ইসলামবিরোধী, অশ্লীল বা ক্ষতিকর কোনো কিছু না থাকে, তাহলে সেই আয় আল্লাহর দৃষ্টিতে বৈধ। কিন্তু যদি আপনার কনটেন্টে হারাম বিষয় থাকে — যেমন অশালীনতা, মিথ্যা প্রচার বা নিষিদ্ধ কাজ — তাহলে সেই ইনকাম কখনোই হালাল হবে না। 

তাই সবসময় চেষ্টা করুন হালাল পথে উপার্জন করতে, কারণ হালাল রুজিই মানুষকে পরিশুদ্ধ, শান্তি ও বরকতময় জীবন দেয়। এই নীতিগুলো মানলে আপনার ফেসবুক আয়ের পথটি হালাল এবং বরকতময় হবে, ইনশাআল্লাহ।

ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ইনকাম 

ফেসবুক থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায় জানার পাশাপাশি অনেকেই জানতে চান, ফেসবুক প্রোফাইল থেকে কি সত্যিই টাকা ইনকাম করা যায়উত্তর হলো - হ্যাঁ, সম্ভব। ফেসবুক প্রোফাইল থেকেও আয় করা যায়, তবে এটি ফেসবুক পেজের তুলনায় কিছুটা সীমিত। আপনার প্রোফাইলে যদি পর্যাপ্ত ফলোয়ার থাকে এবং আপনি নিয়মিত আকর্ষণীয় কনটেন্ট বা ভিডিও পোস্ট করেন, তাহলে সেখান থেকেও ইনকামের সুযোগ তৈরি হয়। তবে এখানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে — প্রোফাইলে আপলোড করা ভিডিও সাধারণত কম ভিউ পায়। 

কারণ ফেসবুকের অ্যালগরিদম অনুযায়ী প্রোফাইলের পোস্ট বা ভিডিও সাধারণত নির্দিষ্ট বন্ধুবান্ধব ও ফলোয়ারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে ভিডিওর রিচ বা পৌঁছানোর হার কম হয়। এই কারণে দেখা যায়, ফেসবুক পেজের তুলনায় প্রোফাইল থেকে ইনকামের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তবুও, যারা নতুন শুরু করছেন বা এখনো পেজ তৈরি করেননি, তারা চাইলে প্রোফাইল থেকেই ইনকাম শুরু করতে পারেন। ধীরে ধীরে ফলোয়ার বাড়িয়ে এবং মানসম্মত কনটেন্ট পোস্ট করে ভবিষ্যতে সহজেই পেজে রূপান্তর করা সম্ভব।

ফেসবুক ভিডিও থেকে কত টাকা আয় করা যায়

বর্তমান সময়ে ফেসবুক পেজ কিংবা প্রোফাইল—দুটোই আয়ের জন্য ব্যবহার করা যায়। যদি আপনি নিয়মিতভাবে ভিডিও, ছবি বা টেক্সট কনটেন্ট প্রকাশ করেন এবং ফেসবুকের সমস্ত নীতিমালা (Facebook Monetization Policy) অনুসরণ করেন, তাহলে খুব সহজেই একসময় ফেসবুক থেকেই বড় অঙ্কের টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনার তৈরি করা ভিডিও বা পোস্টগুলো যত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং যত বেশি ভিউ পাবে, তত বেশি আপনার আয়ের সম্ভাবনাও বাড়বে।

ফেসবুকের ভিডিও কনটেন্টগুলো অনেকটাই TikTok-এর ভিডিওর মতো সংক্ষিপ্ত ও বিনোদনমূলক, যা দ্রুত দর্শকদের আকৃষ্ট করতে পারে। আজকাল বেশিরভাগ ফেসবুক ব্যবহারকারীই সময় কাটানোর জন্য রিলস ভিডিও দেখে। তাই আপনার কাজ হবে এমন কনটেন্ট তৈরি করা, যা দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের পুরো ভিডিওটি দেখার আগ্রহ জাগাবে। যখন আপনার ভিডিওগুলো বেশি দেখা শুরু হবে, তখন ফেসবুক সেই ভিডিওতে বিজ্ঞাপন (Ads) দেখানো শুরু করবে।

এভাবেই বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি ভিডিও মনিটাইজেশন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।আপনি যত বেশি মানসম্মত ভিডিও তৈরি করবেন এবং নিয়মিত আপলোড করবেন, তত দ্রুত ইনকাম বাড়বে। ধারাবাহিকভাবে কাজ করলে এবং দর্শকদের সাথে সংযোগ বজায় রাখলে, ফেসবুক থেকে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব

ফেসবুকে লাইক দিয়ে ইনকাম 

বর্তমানে বলা যায়, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করে। আমরা প্রতিদিন অসংখ্য ভিডিও দেখি, লাইক দিই, কমেন্ট করি—কিন্তু জানেন কি? শুধুমাত্র লাইক দিয়েও এখন টাকা ইনকাম করা যায়! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! আপনি ফেসবুকে যেসব পোস্টে লাইক দেবেন, সেখান থেকেও পয়েন্ট আকারে ইনকাম করা সম্ভব। এবং আশ্চর্যের বিষয় হলো—এর জন্য আলাদা কোনো ফেসবুক পেজের প্রয়োজন নেই; আপনি চাইলে আপনার মূল ফেসবুক আইডি (Main ID) দিয়েই আয় শুরু করতে পারেন।

  • কিভাবে লাইক দিয়ে ইনকাম করবেন? 

এজন্য প্রথমেই আপনাকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপটির নাম হলো Make Money With Givvy Social, যা আপনি সহজেই Google Play Store থেকে নামাতে পারবেন। অ্যাপটি ইনস্টল করার পর একটি Gmail অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন আপ করুন। লগইন সম্পন্ন হলে আপনি বিভিন্ন পোস্ট দেখতে পাবেন।

প্রতিটি পোস্টে লাইক দিলে পয়েন্ট পাওয়া যাবে, আর সেই পয়েন্ট জমা করে আপনি টাকায় রূপান্তর করতে পারবেন। লাইক যত বেশি করবেন, পয়েন্টও তত বেশি জমবে, আর পয়েন্ট যত বেশি হবে—আপনার ইনকামও তত দ্রুত বাড়বে।

  • শুধু লাইক নয়, পোস্ট দিয়েও আয় করুন 

এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র অন্যের পোস্টে লাইক নয়, নিজের পোস্ট দিয়েও আয় করতে পারবেন আপনার পোস্টে যত বেশি লাইক ও কমেন্ট আসবে, আপনার আয়ও তত বাড়বে। অল্প সময়েই আপনি বুঝতে পারবেন—সাধারণ ফেসবুক ব্যবহার করেই কীভাবে একটি অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করা যায়।

ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয়

বর্তমানে শুধু ফেসবুক পেজ নয়, ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনা করেও আয় করা সম্ভব। এখন অনেক জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার সদস্য সক্রিয় থাকে। এই বড় গ্রুপগুলো ঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রায়ই একজন বা একাধিক মডারেটর (Moderator) এর প্রয়োজন হয়।
আপনি চাইলে এমন কোনো বড় গ্রুপে মডারেটর হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন। আপনার কাজ হবে গ্রুপের নিয়ম বজায় রাখা, পোস্টগুলো অনুমোদন করা, স্প্যাম বা অনুপযুক্ত কনটেন্ট রিমুভ করা এবং সদস্যদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা। এই কাজের বিনিময়ে গ্রুপের অ্যাডমিন বা মালিক আপনাকে মাসিক একটি নির্দিষ্ট বেতন বা পারিশ্রমিক প্রদান করবেন। ফলে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনে আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারবেন।
  • কম সময়ে ইনকাম
মডারেটর হিসেবে কাজ করতে হলে সারাদিন সময় দিতে হয় না। প্রতিদিন মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় দিলেই যথেষ্ট। অল্প সময় ব্যয় করেই আপনি ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনার মাধ্যমে ভালো একটা অতিরিক্ত ইনকাম করতে পারেন। তাই দেখা যাচ্ছে, শুধু ভিডিও বানানো বা পেজ চালানো নয় — এখন ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনাও আয়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। আপনি যদি নিয়মিত, দায়িত্বশীল এবং সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই ফেসবুক থেকে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

ফেসবুক রিলস থেকে আয় 

বর্তমানে টিকটকের মতো ফেসবুকেও শর্ট ভিডিও আপলোড করে আয় করা সম্ভব। টিকটকে আমরা যেমন ছোট ছোট ভিডিও রিলস আকারে প্রকাশ করি, ঠিক একইভাবে ফেসবুকেও শর্ট ভিডিও বা রিলস আপলোড করা যায়। ফেসবুকের এই শর্ট ভিডিওকে রিলস (Reels) বলা হয়। আপনি যদি নিয়মিত নতুন এবং আকর্ষণীয় রিলস বানান, তবে এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয় করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, প্রতিনিয়ত নতুন কনটেন্ট আপলোড করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে সাহায্য করে।

  • ফেসবুক রিলস থেকে আয়ের শর্ত 

আপনার ফেসবুক চ্যানেল বা পেজে অবশ্যই মনিটাইজেশন (Monetization) সক্রিয় থাকতে হবে।
যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজে মনিটাইজেশন চালু থাকে, তাহলে রিলস ভিডিও আপলোড করে প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক রিলসের একটি বিশেষ সুবিধা হলো — এই ধরনের ভিডিওতে দ্রুত ভিজিটর বা দর্শক পাওয়া যায়। তাই প্রথম থেকেই ফেসবুকে রিলস বানানো শুরু করলে আপনার কনটেন্ট দ্রুত জনপ্রিয় হতে পারে এবং আয় শুরু করা সম্ভব।

লেখক এর শেষ মন্তব্য : ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় 

আজকাল আমরা অনেকেই প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করি। তবে এই সময় এবং ব্যবহারকে যদি আয়ের উৎসে রূপান্তর করা যায়, তাহলে এটি আপনাকে কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করতে পারে। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়, কোন ধরনের কনটেন্ট আপলোড করা উচিত, এবং কিভাবে মনিটাইজেশন চালু করে ইনকাম বাড়ানো সম্ভব। 

আশা করি, এই তথ্যগুলো পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। যদি এখনো পুরো আর্টিকেলটি না পড়ে থাকেন, তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো পোস্টটি পড়ে নেওয়ার পরামর্শ রইল। এতে আপনি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন এবং আপনার ফেসবুক ব্যবহারকে কার্যকরভাবে অর্থ আয় করার উপায়ে রূপান্তর করতে পারবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url