*/

বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - ব্যবহার নিয়মসহ টিপস

বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় শিখুন ঘরে বসেই। বেসন ত্বকের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। ধাপে ধাপে ব্যবহারের নিয়মসহ টিপস দিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করুন।

বেসন-দিয়ে-ফর্সা-হওয়ার-উপায়


বেসন ত্বকের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। বেসন ত্বক ফর্সা করার পাশাপাশি ত্বকের নানারকম সমস্যা দূর করে। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব ফর্সা হওয়ায় বেসন ব্যবহারের কিছু টিপস।

পেজ সূচিপত্র : বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 

বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 

বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় অনেক রয়েছে। বেসন বলা হয় সাধারণত বুটের ডাল বা ছোলার ডালের গুড়াকে। বেসন রূপচর্চার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী একটি উপাদান। ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে বেসন। মুখে বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়গুলো খুব সহজ। বেসন দিয়ে রূপচর্চা করতে হলে বেসনের ফেসপ্যাক মুখে সঠিকনিয়মে ব্যবহার করতে হবে। 
বেসন-দিয়ে-ফর্সা-হওয়ার-উপায়


  • প্রথম টিপস : বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 
  1. এক চামচ বেসন 
  2. এক চিমটি হলুদ গুঁড়া 
  3. এক চামচ গুড়া দুধ 
  4. পরিমাণ মতো গোলাপ জল অথবা পানি 
উপরের এই উপকরণ গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্টটি পুরো মুখে লাগান। লাগানোর ৩০ মিনিট হয়ে গেলে মুখটি পরিষ্কার করে নিন। আপনি যদি এই পেস্টটি সপ্তাহে ২-৩ বার লাগান তাহলে আপনার ত্বকের রং দ্রুত ফর্সা হবে। 
  • দ্বিতীয় টিপস : বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 
  1. দুই চামচ বেসন 
  2. এক চামচ শশার রস 
  3. এক চামচ গোলাপ জল 
উপরের এই উপকরণ গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্টটি পুরো মুখে লাগাতে থাকুন। লাগানো হয়ে গেলে ২০ মিনিট রেখে মুখটি ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এইভাবে আপনি বেসনের ফেসপ্যাক নিয়মিত মুখে ব্যবহার করলে রোদে পড়া দূর হবে এবং ত্বক ফর্সা হবে। 

মুখে বেসন ব্যবহারের নিয়ম 

মুখে বেসন ব্যবহার করার নিয়ম আমরা জানব নিচের কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে। শুধু মুখে বেসন ব্যবহার করা যায় এমন না, বেসনের সাথে আরো অনেক কিছু ব্যবহার করে আমরা রূপচার্য করতে পারি। চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক -
  • এলোভেরা জেল : এলোভেরা জেল এর ময়শ্চারাইজিং ও হিলিং উপাদানের জন্য পরিচিত। বেসনের সঙ্গে এলোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে মাখলে জ্বালা ভাব, লালচে ভাব থেকে মুক্তি পাবে। এটি ত্বককে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। 
  • টক দই : টক দই এর মধ্যে ল্যাকটিক এসিড রয়েছে, যা ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। বেসনের সঙ্গে টক দই মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব কে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ত্বকের অস্বস্তি কমাবে।
  • লেবুর রস : লেবুর রসের মধ্যে সাইট্রিক এসিড রয়েছে, যা ত্বককে এক্সপোলিয়েট করতে সাহায্য করে এবং মুখের দাগ সব দূর করতে সাহায্য করে। যাদের ব্রণ আছে ত্বকে তারা বেসন ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। 
  • হলুদ : হলুদের মধ্যে এন্টি-ইনফ্লেমেন্টরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। বেসনের সাথে হলুদ মিশিয়ে মাখলে ব্রণ, লালচে ভাব থেকে মুক্তি পাবেন।
  • গোলাপ জল : গোলাপ জলের মধ্যে হাইড্রেটিং উপাদান রয়েছে। এটি ত্বক পরিষ্কার করতে এবং ত্বকের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

মুখে বেসন মাখলে কি হয় 

মুখে বেসন মাখলে ত্বক পরিষ্কার হয় এবং সমস্ত মহিলাদের জীবাণু পরিষ্কার হয়। বেসন ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। এটি ব্রণ, ব্রেক আউট কে প্রতিরোধ করে। ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে। বেসন মুখের জন্য একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান। মরা চামড়া নিরাময়ের জন্য সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্য করে তুলে। বেসন ত্বক ফর্সা ও টানটান করতে এবং ত্বকের অবাঞ্ছিত লোমসহ মুখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

বেসনের চমৎকার উপকারিতা 

ত্বকের জন্য বেসন খুবই উপকারী একটি উপাদান। ত্বকের যত্নে বেসন খুবই কার্যকরী। বেসন ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। বেসনের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন -
  • বেসন ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার ও গ্লো হয়। 
  • অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে বেসন ব্যবহারে। 
  • পিম্পল ও ব্রণের সমস্যার সমাধান দেয়। 
  • বেসন ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে। 
  • ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। 
  • তরুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। 
  • শুষ্ক ত্বকে পুষ্টি যোগায় বেসন। 
  • রোদে পড়া ভাব দূর করে বেসন ব্যবহারে। 
  • এবং ব্রণের সমস্যা দূর করে। 
আপনি যদি সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাহলে ত্বকের অনেক উপকারিতা পাবেন। 

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ফেসপ্যাক 

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ফেসপ্যাক মুখে মাখার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ফেসপ্যাক হচ্ছে একটি আদর্শ উপাদান। বেসন খুব ভালোভাবে তৈলাক্ত বা তেল ভাব শোষণ করতে পারে। তাছাড়াও ত্বকের ময়লা পরিষ্কার এবং ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে। বেশ কয়েকটির মাধ্যমে বেসনের ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী বেসনের ফেসপ্যাক এর প্রস্তুত করার নিয়ম উল্লেখ করা হলো। 
প্রস্তুত প্রণালী :
  • এক চামচ বেসন 
  • দুই চামচ গুড়া 
  • এক চামচ লেবুর রস 
  • হাফ চামচ গুড়া দুধ 
  • পরিমাণ মতো গোলাপজল 
উপরের এই উপকরণ গুলো খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর এই পেস্টটি পুরো মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মুখ ভালো পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এইভাবে আপনি যদি নিয়ম করে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার নিয়মিত লাগাতে পারেন, তাহলে আপনার ত্বকের তৈলাক্ত বা তেলভাব ধীরে ধীরে কমে আসবে। অতএব, এই ভাবেই খুব সহজে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ফেসপ্যাক বানিয়ে নিতে পারবেন। 

বেসন ও হলুদ দিয়ে ফেসপ্যাক 

বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হলুদের থাকা সকল উপাদান যেগুলো আমাদের ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল করে। এই প্যাকটি আপনার মুখের হারানো আভা আবার পুনরুদ্ধার করে এবং একক ব্যবহারের ফলে ত্বককে কে উজ্জ্বল করে তোলে। তো চলুন জেনে নেই বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক ব্যবহারের নিয়ম -

প্রয়োজনীয় উপাদান 
  • দুই চামচ বেসন
  • হাফ চামচ হলুদ গুঁড়া 
  • হাফ চামচ লেবুর রস 
  • পরিমাণ মতো গোলাপ জল অথবা পানি 
তৈরির ধাপ 
  • প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে এই উপাদান গুলো ভালো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রনটি ঘন পেস্ট এ পরিণত হয়ে গেলে তা মুখে লাগান। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ ফেসপ্যাক আপনার ত্বকের উপর প্রাকৃতিক এক্সপ্লোয়েডেটর হিসেবে কাজ করবে। 

বেসন ও কফি দিয়ে ফেসপ্যাক 

বেসন ও কফির ফেসপ্যাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, মরা চামড়া অপসারণ, ত্বক মসৃণ এবং কমল করতে সাহায্য করে। বেসন ও কফির ফেসপ্যাক একটি কার্যকরী ও বহুল প্রচলিত একটি উপাদান। তবে আসুন জেনে নেওয়া যাক বেসন ও কফির ফেসপ্যাক কিভাবে বানাতে হয়। 

প্রয়োজনীয় উপাদান 
  • এক চামচ বেসন 
  • হাফ চামচ কফি 
  • এক চামচ টক দই 
  • এক চামচ নারকেল তেল 
তৈরির ধাপ 
  • উপরের সব উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর সেই পেস্ট পুরো মুখে লাগান। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। আপনি এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং দাগ দূর হবে। 

মুখের জন্য বেসন ও মধুর ফেসপ্যাক

এক চা চামচ বেসনের সঙ্গে কিছুটা হলুদ গুঁড়া এবং এক চামচ টমেটো রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর হালকা আদ্রতা বজায় রাখতে দু টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে এক চা চামচ মধু এবং হাফ চামচ টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন এবং হালকা শুকিয়ে আসলে ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বক যদি শুষ্ক তো তবে নিয়মিত মধুর সাথে বেসন ব্যবহার করুন। মুখ এবং ত্বকের জন্য বেসন ব্যবহার করা একটি প্রাচীন কৌশল, কিন্তু আমরা এখনো ব্যবহার করি। বেসন ও মধুর মিশ্রণটি মুখে লাগানোর উপকারিতা রয়েছে বহুগুণ। এটি সমস্যা দূর করে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও দ্বিগুণ মসৃণ করতে সাহায্য করে। 

মুখে বেসন মাখার অপকারিতা 

মুখে বেসন মাখার অপকারিতা জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত  প্রয়োজন। ত্বকে পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট হলে নানান সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। বেসনে আছে অ্যালকালাইজিং উপাদান, যা আপনার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা করে। বেসন ত্বকের জন্য উপকারী এবং নানা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, সে কথা আর বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। তবে আপনার ত্বকের ধরন বুঝে এ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা ভালো। না হলে ত্বকে সমস্যা আরো বাড়তে পারে। 
আরো পড়ুন ঃ
ত্বক শুষ্ক হলে বেসন ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেসন ব্যবহার করা ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। বেসনের যে কোন ফেসপ্যাক মুখে পাঁচ থেকে দশ মিনিটের বেশি রাখবেন না। এতে ত্বকের শুষ্কতা বাড়ে এবং ত্বক ক্ষতি হতে পারে। আপনার ত্বকে যদি এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে ব্যবহার না করাই উচিত। তবে অবশ্যই বেসন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। 

লেখক এর শেষ মন্তব্য : বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 

পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বেসন দিয়ে রূপচর্চা। বেসন দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া একটি কার্যকরী মাধ্যম। স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে বেসন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় অন্যতম। তাই আপনি যদি স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো খুঁজে থাকেন তাহলে বেসনের ফেসপ্যাক সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক মসৃণ এবং কমল হবে। 

আজকের আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন, তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন যেন তারাও পড়ে উপকৃত হয়। এমন ধরনের আরও আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইটটি ঘুরে আসুন www.naxoma.com এতক্ষন মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আল্লাহাফেজ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url