*/

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম - নতুনদের জন্য সম্পূর্ণ গাইড

 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানতে চান? এখানে পাবেন ধাপে ধাপে নির্দেশনা - চ্যানেল তৈরি, কাস্টমাইজেশন, ভিডিও আপলোড, মনিটরাইজেশন চালু, SEO অপটিমাইজেশন ও ইউটিউব থেকে আয় করার সম্পূর্ণ গাইড বিস্তারিত আলোচনা করব। নতুনদের জন্য একদম সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 
ইউটিউব-চ্যানেল-খোলার-নিয়ম


বর্তমানে ইউটিউব একটি জনপ্রিয় এটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম। তাই এই ইউটিউব প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তার কনটেন্ট ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন উপায়ে আয় করছে। যদি আপনি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান এবং কনটেন্ট শেয়ার করতে চান তাহলে আজকের এই গাইডের মাধ্যমে আপনাকে অনেক সাহায্য করে তুলবে। 

পেজ সূচিপত্র : ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

ইউটিউব গুগলের একটি প্রতিষ্ঠান। আপনি চাইলে দুই ধরনের ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। ব্যক্তিগত ও ব্রান্ড হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম গুলো জেনে নেই -
  • প্রথমত গুগল একাউন্ট খুলুন : ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হলে আপনাকে একটি গুগল একাউন্ট খুলতে হবে। সেখানে আপনি জিমেইল আইডি আইডির সাথে অ্যাকাউন্টটি ক্রিয়েট করতে হবে। তাহলে সহজেই নিচে স্টেপগুলো অনুসরণ -
  1. জিমেইল আইডি সাইন আপ করুন। 
  2. লিঙ্কে গিয়ে আপনার নাম ও ইউজার আইডি দিয়ে এবং নতুন একটি পাসওয়ার্ড ক্রিয়েট করে একাউন্টটি তৈরি করুন। 
  3. প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে একাউন্টে ভেরিফাই করুন। 
  • দ্বিতীয়তে ইউটিউবে গিয়ে লগইন করুন : আপনার যদি জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যায় তাহলে ইউটিউবে গিয়ে আপনার জিমেইল একাউন্টের সাথে লগইন করুন। 
  • তৃতীয়তে নতুন ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন : আপনি যদি জিমেইল একাউন্টের সাথে ইউটিউব চ্যানেলটি লগইন করার পর সেখানে ডান দিকে আপনার প্রোফাইলের আইকন দেখতে পান। তাহলে সেখানে ক্লিক করুন। 
  1. youtube চ্যানেল অপশন সিলেক্ট করুন 
  2. তারপর create channel বাটনে গিয়ে ক্লিক করুন 
  3. আপনি কোন ক্যাটেগরি চ্যানেল বানাবেন বা কি ধরনের চ্যানেল করবেন সেই বিষয়ে আপনার নাম নির্ধারিত করুন। 
  4. তারপর create অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনার ইউটিউবের নাম অ্যাড করলে আপনার চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। 
  • চতুর্থতে ইউটিউব চ্যানেলটি কিভাবে কাস্টমাইজ করবেন : এখন আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে গেল। এখন আপনি চ্যানেলকে আপনার মতো করে সাজাতে পারেন। আর এটাকে চ্যানেল কাস্টমাইজ বলা হয়। আপনি এখন প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন। তারপর "your channel" অপশন এ ক্লিক করুন। তার ওপরে ডানদিকে "Customise Channel" অপশনটি পাবেন। এখানে ক্লিক করলে ইউটিউব এর বর্তমান থিম অনুযায়ী তিনটি অপশন থাকবে। আর তা হল layout, branding, basic info. Basic info তে ক্লিক করে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন, আপনার সাথে যোগাযোগের মেইল, ভাষা, লিংক শেয়ার করতে পারবেন। আপনি যদি "branding" অপশনে ক্লিক করেন তখন তিনটি অপশন তথা প্রোফাইল পিকচার, ব্যানার ইমেজ ও ভিডিও ওয়াটার মার্ক অপশন দেখতে পাবেন। আপনি নিজের মতো করে এগুলো যোগ করতে পারেন।

কিভাবে প্রথম ভিডিও আপলোড করবেন ইউটিউব চ্যানেলে 

আমরা সকলেই ইউটিউব চ্যানেল তো খুলেই ফেলি কিন্তু সঠিক নিয়মে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করা জানিনা। সঠিক নিয়মে ইউটিউবের ভিডিও আপলোড না করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভিডিও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে না। তাই অবশ্যই সঠিক নিয়মটা শিখে রাখুন স্টেপ বাই স্টেপ আমি আপনাদের গাইড করব। 
  • প্রথমত আপনাকে create অপশনে যান তারপর। upload video অপশনটিতে ক্লিক করুন। 
  • দ্বিতীয় হল আপনি আপনার ভিডিও নির্বাচিত করুন, যেটি আপনি আপলোড করবেন। 
  • তৃতীয় শিরোনাম্বার টাইটেল (title) নির্বাচন করুন যে বিষয়ে আপনি ভিডিওটি আপলোড করছেন এবং বিবরণ (description) ভিডিও সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু লিখুন। 
  • চতুর্থ হলো এই ভিডিওর ট্যাগ অপশনে গিয়ে কিছু ট্যাগ এড করুন। 
  • এবং সর্বশেষ আপনি ভিডিওটি পাবলিক অর্থ গিয়ে পাবলিশ করুন। 

মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

সাধারণত ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ এ ইউটিউব চ্যানেল খোলা সহজ। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলে youtube চ্যানেল খোলা যায়। এখন আমরা মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানব। মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য ক্রোম ব্রাউজারে গিয়ে "desktop mode" অন করতে হবে। তারপর সাধারণ ইউটিউব চ্যানেল যেভাবে খোলা হয়ে থাকে তা অনুসরণ করতে হবে। সবগুলো ধাপ আমরা উপরে বর্ণনা করেছি। উল্লেখিত ধাপ অনুসরণ করেই মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়। 

এছাড়া youtube অ্যাপ এর মাধ্যমে মোবাইল এ ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়। যদিও তা দিয়ে বিদ্যুৎ পরিসরে কোন চ্যানেল তৈরি ও ম্যানেজ করা যাবে না। স্বল্প কাজে ব্যবহার করার জন্য মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যেতে পারে। সে জন্য আপনাকে ইউটিউব অ্যাপে জিমেইল আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। অতঃপর প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে "your channel" অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। সেটিংস অপশনে গিয়ে আপনার মত করে তা পরিবর্তন করতে পারবেন। 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন 

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন youtube চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগে? অথবা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি কাগজপত্র বা তথ্যের প্রয়োজন পড়ে? আসলে মজার বিষয় হল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কোন টাকা পয়সা লাগে না, এটি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং এখানে সামান্য বেসিক কিছু তথ্যের প্রয়োজন পড়ে। তবে youtube চ্যানেল খুলতে অন্য যে জিনিসগুলো প্রয়োজন লাগবে সেগুলো হলো -
  • একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট 
  • একটি ডিভাইস (মোবাইল অথবা কম্পিউটার) 
  • ইন্টারনেট সংযোগ 
  • মোবাইল নাম্বার 

ইউটিউব চ্যানেল কত প্রকার 

ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দুই ধরনের ইউটিউব চ্যানেল খোলার ব্যবস্থা রাখা আছে। 
  • পার্সোনাল ইউটিউব চ্যানেল : youtube এর ওয়েবসাইটে গিয়ে জিমেইল একাউন্ট লগইন করে মাত্র কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করলেই পার্সোনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা যায়। তবে পার্সোনাল ইউটিউব চ্যানেল একজন মাত্র ব্যক্তি পরিচালনা করতে পারেন এবং এখান থেকে টাকা ইনকামের তেমন কোনো সুযোগ থাকে না। 
  • ব্রান্ড ইউটিউব চ্যানেল : পার্সোনালি ইউটিউব চ্যানেলের চেয়ে ব্র্যান্ড ইউটিউব থেকে বেশ কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয় এবং এখানে কাস্টমাইজেশন এর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। ব্রান্ড ইউটিউব চ্যানেলে টিম বা গ্রুপের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এখানে টাকা ইনকামে যথেষ্ট সুযোগের পাশাপাশি অন্যান্য অনেক সুবিধা রয়েছে অর্থাৎ এটি একটি প্রফেশনাল youtube চ্যানেল। কাস্টমাইজ করার পরে এই ধরনের চ্যানেল দেখতে অনেকটা প্রফেশনাল মনে হয়। 

ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করার ৭ উপায় 


কিভাবে মনিটাইজেশন চালু করবেন 

আপনার youtube চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু করার জন্য ইউটিউব কর্তৃপক্ষদের সকল শর্ত আরোপ করেছে সেগুলো যদি পরিপূর্ণভাবে পূরণ করে থাকেন। তার সাথে উন্নত মানের ভিডিও নিয়মিত আপলোড করে থাকেন তাহলে আপনার চ্যানেলের মনিটাইজেশনের আওতায় আসার সম্ভাবনা থাকবে। তারপরেও মনিটরেশন আপনার ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন পাবে কি পাবে না তা জানার জন্য ছোট্ট একটি উপায় রয়েছে -
  • প্রথমে যে কোন ব্রাউজারে গিয়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করতে হবে 
  • এরপর youtube স্টুডিওতে প্রবেশ করে বাম পাশের মেনু অপশনে মনিটাইজেশন এ ক্লিক করতে হবে 
  • Monetization Eligibility status এর ভেতরে দেখতে পাবেন apply now বাটন যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি মনিটাইজেশনের উপযুক্ত হয়ে থাকে। আর উপযুক্ত না হলে apply now বাটনটি দেখা যাবে না। 

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে ভিডিওটি আপনার সাবস্ক্রাইবার এবং ভিডিওতে ভিউ বাড়তে থাকবে। এ পর্যায়ে মনিটাইজেশনের জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে সেগুলোর সম্পূর্ণ পূর্ণ করলে ইউটিউব করতে পারব আপনার মনিটাইজেশন চালু করবে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মনিটাইজেশন চালু হওয়া অর্থ হলো আপনার যা ইনকাম হবে তা আপনি উইথ অর্থাৎ টাকা তুলতে পারবেন। ইউটিউব থেকে টাকা তোলা বোঝাতে মূলত গুগল এডসেন্স এ যে ডলার জমা হবে সেটাকে বুঝায়। 

ইউটিউবে ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে যত ইনকাম হতে থাকবে তার সবটুকুই গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্টে জমা হতে থাকবে। মনিটাইজেশন চালু হওয়ার পর আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে ১০ ডলার জমা হলে একাউন্ট খোলার সময় যে ঠিকানা দিয়েছিলেন সেই ঠিকানাতে পিন সম্বলিত একটি চিঠি আসবে ভেরিফিকেশন করার জন্য। চিঠির ভেতরে একটি পিন থাকবে যেটি দিয়ে আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করতে হবে। গুগল এডসেন্স একাউন্ট সফলভাবে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে আপনার নির্বাচিত ব্যাংক অর্থাৎ বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে google এডসেন্স একাউন্ট যুক্ত করতে পারবেন। 

পরবর্তীতে আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে ১০০ ডলার বা তার বেশি জমা হলে অ্যাডসেন্স একাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডলার আপনার সিলেক্ট করা বাংলাদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা হিসেবে ট্রান্সফার হয়ে জমা হবে। যে মাসে ১০০ ডলার জমা হবে তার পরবর্তী মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংক একাউন্টে জমা হবে। জমা হওয়ার চার-পাঁচ দিন পরে আপনি ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলতে পারবেন। 

আপনার ভিডিওটি কে কিভাবে SEO অপটিমাইজ করবেন 

যে কোন সোশ্যাল মিডিয়া কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে এসইও সম্পর্কে নির্ধারিত জ্ঞান থাকা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এসইও ছাড়া আপনার ভিডিও রেঙ্ক করা খুবই দুষ্কর হয়ে পড়বে। তাই অবশ্যই আপনাকে এসইও ভিডিও করা শিখতে হবে। 
  • এসইও করতে হলে আপনাকে প্রথমত ইউটিউবে যে বিষয়ে আপনি ভিডিও বানাচ্ছেন সে বিষয়ে টাইটেল খুবই আকর্ষণীয় বানাতে হবে। 
  • আপনি যখন ভিডিও সম্পর্কে কিছু বিবরণ (description) লিখবেন তার সাথে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড এড করুন এটির ফলে আপনার ভিডিওর র‍্যাঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 
  • এসইও ক্ষেত্রে ভিডিওর বিষয় সমূহ মিল রেখে আপনাকে জনপ্রিয় কিছু ট্যাগস ব্যবহার করতে হবে। 
  • এসইও করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার ভিডিও থাম্বেল খুব সুন্দর করে বানাতে হবে যেটি আপনার ভিডিও দেখা করে ক্লিক করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য : ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সহ সেটআপ করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সহজ যদি উপরে নিম্নলিখিত নিয়ম গুলো মেনে চলেন। কিন্তু ইউটিউব সফল হতে গেলে আপনাকে পরিকল্পিতভাবে মনোযোগ সহকারে কাজ করতে হবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url