*/

নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস - শান্তি ও খুশু আনুন

নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপসগুলো শিখুন। কেননা নামাজ হলো আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দের একটি ইবাদত। সহজ ও কার্যকর কৌশল দিয়ে আপনারা নামাজকে আরো গভীর ও শান্তিপূর্ণ করুন।

নামাজে-মনোযোগ-বাড়ানোর-ইসলামিক-টিপস


কোন কাজে মনোযোগ নষ্ট না হলেও নামাজে দাঁড়ালেই নামাজী ব্যক্তির মনোযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। ইসলামে এটি শয়তানের ফাঁদ হিসেবেও বলা হয়েছে। এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো ইসলামিক টিপস, খুশু অর্জনের উপায় এবং নামাজকে আরও গভীর ও শান্তিপূর্ণ করার কার্যকর কৌশল। 

পেজ সূচিপত্র : নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস 

নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস 

একজন মুমিন ব্যক্তির জীবনের সবথেকে অন্যতম এবাদত হলো সালাত বা নামাজ। নামাজ এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিদ্ধ গ্রহণ করা সম্ভব হয়। কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে (তিরমিজি )। মহান আল্লাহ তায়ালা নামাজের গুরুত্ব দিয়েছেন অনেক বেশি। পবিত্র কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা বলা হয়েছে। অন্য কোন বিষয় নিয়ে এতবার বলা হয়নি। নামাজকে বেহেস্তের চাবিকাঠি বলা হয়।

আমরা অনেকেই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকি। কিন্তু নামাজে দাঁড়ালে অনেক সময় দুনিয়াবি চিন্তা মাথায় চলে আসে। যার কারণে নামাজের মধ্যে অনেক রকম ভুল করে থাকি এবং অনেক সময়ই রাকাত সংখ্যা ভুলে যায়। এক হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন এটিকে 'শয়তানের ছিনতাই' বলেছেন। নামাজের মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস আছে। কিন্তু তার আগে আমাদেরকে জানতে হবে নামাজে কোন শয়তান মনোযোগ নষ্ট করে তার নাম। 

খানযব নামের এক শয়তান আছে যার কাজ হল মানুষের মনোযোগ নষ্ট করা। মহানবী (সা.) বলেছেন, নামাজ যখন তোমাদের কারো মনে বিভ্রান্তি আসে তখন বুঝবে যে এটা শয়তান খানযবের পক্ষ থেকে এসেছে। যখন এটা অনুভব করবে তখন আউযুবিল্লাহি মিনাস শয়তানির রজিম পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে এবং বাম দিকে হালকা তিনবার থুথু ফেলবে।  (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২২০৩) এখন আমরা জানবো নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপসগুলো -
  • পরিবেশ পরিবর্তন করুন : নামাজ পড়ার সময় আমরা যদি আমাদের চারপাশের পরিবেশ পরিবর্তন করি, তাহলে তা আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। 
  •  নামাজ পড়ার পূর্ব প্রস্তুতি : নামাজের আগে কিছু সময় নিয়ে নিজেদের মনের প্রশান্তি অর্জন করা সঠিক। 
  • মনোযোগী হয়ে নিয়মিত প্রার্থনা করুন : নামাজটি নিয়মিত পড়া আমাদের প্রত্যেকটি প্রার্থনার সময় মনোযোগী হতে সাহায্য করবে। তাই চেষ্টা করুন প্রার্থনা আদায় করতে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে। 
  • নামাজের অর্থ বোঝার চেষ্টা করুন : নামাজের ও দোয়া গুলোর অর্থ জানার ও চেষ্টা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ বোঝে নামাজ পড়লে আমাদের মনোযোগ বাড়বে এবং আমরা সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারব। 
  • পরস্পরের সাথে নামাজ পড়া : একত্রে নামাজ পড়লে আমরা নিজেদের সেই সময়ের জন্য আরো বেশি উৎসাহিত করতে পারি। পারিবারিক বা বন্ধুদের সাথে মিলিত হয়ে নামাজ পড়া একটি শক্তিশালী কমিউনিটি গঠন করবে এবং এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। 
  • নামাজের নিয়মনীতি : নামাজ কেবল সহানুভূতির প্রকাশ নয়, বরং এর নিয়মনীতি বজায় রাখাও জরুরি। প্রতিদিন সঠিক সময়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। এটি অভ্যাসে পরিণত হলে, মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। 
  • নামাজের কায়দা জানুন : নামাজের বিভিন্ন কায়দা ও আরকান সম্বন্ধে জ্ঞানের মাধ্যমে আমরা আমাদের আচরণ এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারব। 
  • প্রশান্তির জন্য দোয়া : নামাজের আগে এবং পরে দোয়া করার সময়, নিজেদের জন্য এবং আরো বিভিন্ন সাধকের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করুন। এটি আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্বাসকে আরো দৃঢ় করবে। 

পবিত্রতা অর্জন করা

নামাজে দাঁড়ানোর আগে সর্বপ্রথম পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। পবিত্রতার ক্ষেত্রে যদি কোন ত্রুটি থাকে তাহলে নামাজ মনোযোগ আসবেনা। পবিত্র না হলে সেখানে শয়তান থেকে যাবে এবং শয়তান নামাজে বাধা দেবে। সালাতের মনোযোগ বিনষ্ট করবে শয়তান এই পবিত্রতা অর্জনের ত্রুটির  সুযোগ নিয়েই। নামাজে ওযু করা ফরজ। ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা।

হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি অজুতে আল্লাহর নাম স্মরণ করে না, তার অজু পরিপূর্ণ নয়! তাই ওযু শুরু করার আগে অবশ্যই বিসমিল্লাহ পড়ে ওযু শুরু করতে হবে। নামাজে মনোযোগী ও গুনাহ মুক্ত হতে শুরু থেকেই হক আদায় করে ওযু করা। কেননা অজুতে হাত ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত দ্বারা সংঘটিত গুনাহ পানির সঙ্গে ধুয়ে চলে যায়। 

ভালোভাবে অজু করে নিন 

নামাজে যদি আপনি মনোযোগ ধরে রাখতে চান তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি হলো ভালভাবে ওযু করা। অজু কেবলমাত্র শারীরিক পরিশুদ্ধি নয় বরং এটি আপনার আত্মারও পবিত্ততা নিয়ে আসে। কুরআন ও হাদিসে ওযুর গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে, অজু করলে মানুষের ছোট ছোট গুনাহ গুলি পানি দিয়ে ধুয়ে যায়। তাই সঠিকভাবে অজু করার হৃদয় ও মন কেউ পবিত্র করে। আপনি যখন ধীরে ধীরে মনোযোগ সহকারে অজু করবেন তখন প্রতিটি অঙ্গ পবিত্রতা হওয়ার সাথে আপনার মন দুনিয়াবী চিন্তা থেকে ধীরে ধীরে মুক্ত হবে। 
আরো পড়ুন : 
ভালোভাবে ওযু করার আরেকটি উপকারিতা হলো মানসিকতা সতেজ করে ক্লান্তি দূর করে এবং মনকে শান্ত করে। যার কারনে নামাজে দাঁড়ালে আপনার মন অন্যদিকে ছুটে যাবে না। বরং সেজদা ও দোয়ার গভীর মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে। তাই ওজু নামাজের চাবিকাঠি। নামাজ শুরু করার আগে সব সময় ভালোভাবে ওযু করে নিন। ধীরে ধীরে প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করুন। তাহলে নামাজে একাগ্রতা ও খুশু অর্জন করা সম্ভব হবে। 

নিয়মিত নামাজ আদায় করুন 

নিয়মিত নামাজ পড়া হলো একজন মুসলিমের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস গুলোর একটি। শুধু ফরয ইসলামিক কর্তব্য পূরণ নয় বরং এটি আত্মশুদ্ধি মনোযোগ এবং আল্লাহর সাথে গভীর সংযোগ স্থাপনের একটি প্রাকৃতিক মাধ্যম। নিয়মিত নামাজের অভ্যাস থাকলে মানুষ দৈনন্দিন জীবনের চাপ, মানসিক উত্তেজনা থেকে মুক্তি পায়। এছাড়াও মনোযোগ বৃদ্ধি, মানসিক শান্তি অর্জনে নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত সময় নামাজ পড়া মানে হলো প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ শুরু করা। 

এতে করে আপনার মস্তিষ্কে নিয়মিত রুটিন তৈরি হয় যেটা আপনার মনকে নিজে থেকে নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে। আপনি যদি প্রতিদিন ফজরের নামাজ ঠিক সময় পড়েন তাহলে আপনার মন তখন ধীরে ধীরে প্রস্তুত হবে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করার জন্য। নামাজের মাধ্যমে মন শান্ত রাখা সম্ভব হয়। আপনি যদি নিয়মিত নামাজ আদায় করেন তাহলে দৈনিক তোর জন্য শয়তান আপনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে আগের মত পারবেনা। এতে করে আপনার নামাজের মনোযোগ ঠিক থাকবে। 

নামাজে একাগ্র থাকা 

একাগ্রতা নামাজের প্রাণ। নামাজে দাঁড়ালে শয়তান বারবার মনোযোগ ছিন্ন করার চেষ্টা করে। তাই এমন ভাবে নামাজে দাঁড়াতে হবে যেন আল্লাহ তাআলা আমাকে দেখছেন এটা মনে করতে হবে। নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই ভাবনা ধরে রাখলে নামাজে মনোযোগ আসবে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, "এমনভাবে আল্লাহর এবাদত করো, যেন তাকে তুমি দেখতে পাচ্ছো। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি অবশ্যই তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। " (বুখারী, হাদিস :৫০ ;মুসলিম, হাদিস :৮)

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, "যে সুন্দরভাবে অজু করে, অতঃপর মন ও শরীর একত্র করে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। " (নাসাঈ, হাদিস : ১৫১; বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)

হযরত মোহাম্মদ (সা) আরো বলেছেন, "যে ব্যক্তি নামাজের সময় হলে সুন্দরভাবে অজু করে একাগ্রতার সঙ্গে সুন্দরভাবে রুকু সেজদা করে নামাজ আদায় করে, তার এ নামাজ আগের সব গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে কোন কবিরা গুনাহে লিপ্ত হয়। আর এ সুযোগ তার সারা জীবনের জন্য। " ( মুসলিম)

আন্তরিকতার সাথে নামাজ পড়া 

আন্তরিকতার সাথে নামাজ আদায় করতে হবে। না হলে নামাজে মনোযোগ আসবে না। মহান আল্লাহ তাআলা নিজে আন্তরিকতার সাথে নামাজ আদায় করতে বলেছেন। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে একটি আয়াত নাজিল করেছেন। আয়াতটি হলো, "তোমরা আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দাঁড়াও।" (সূরা বাকারা : আয়াত ২৩৮) 
আরো পড়ুন : 
আবু কাতাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, "নিকৃষ্টতম চোর হল সেই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।" জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! নামাজে কিভাবে চুরি করে? তিনি বলেন, "যে আন্তরিকতার সাথে রুকু -সেজদা পূর্ণভাবে আদায় করে না। " (মুসনাদ আহমদ, মিসকাত, হাদিস : ৮৮৫)

মন দিয়ে আয়াত পড়ুন 

নামাজ শুধু দেহের ইবাদত নয় বরং এটি হলো হৃদয় ও মনের ইবাদত। কাজেই নামাজে খুশু ও মনোযোগ আনতে হলে আপনার প্রতিটি আয়াত মন দিয়ে পড়া অত্যন্ত জরুরি। যখন আমরা কেবল মুখস্ত আয়াত দ্রুত পড়ে ফেলি তখন মন অন্যদিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যদি আমরা সবগুলো শব্দের অর্থ বোঝার চেষ্টা করি এবং সেটা মন দিয়ে অনুভব করি তখন নামাজ ভিন্নমাত্রা পেয়ে যাবে। মন দিয়ে আয়াত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর বাণী আমাদের অন্তরে গভীরভাবে প্রভাব ফেলবে। 

একটা গবেষণায় দেখা গেছে ধ্যান চর্চা মনোযোগ বাড়ায়। তাই নামাজে ধীরে ধীরে ভাবনা সহ এবং অর্থ নিয়ে পড়লে আপনার মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হবে না এবং এটা আপনার মনোযোগ বাড়িয়ে দিবে। কাজেই মন দিয়ে আয়াত পড়া নামাজকে সাধারণ দায়িত্ব থেকে অনেক উন্নতি করে। এবং একটি গভীর আধ্যাত্বিক অভিজ্ঞতাই নিয়ে যায়। তাই প্রতিটি নামাজে আপনাকে চেষ্টা করতে হবে ধীরে ধীরে আয়াত তেলাওয়াত করা এবং তার অর্থ আপনার হৃদয়ে উপলব্ধি করতে হবে। এমন ভাবে আপনি প্রকৃত মনোযোগ অর্জন করতে পারবেন। 

হৃদয় খুলে দোয়া করুন 

দোয়া হলো একজন মুসলমানের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। যখন মানুষ তার সকল আশা কষ্ট চাওয়া পাওয়া একান্ত ভাবে আল্লাহর কাছে তুলে ধরেন, তখন সেই মুহূর্তে হৃদয়ের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে এক অসীম প্রশান্তি। কোরআন ও হাদিসে বারবার বলা হয়েছে যে, আল্লাহ সেই বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন যে বান্দা তাকে একান্ত আন্তরিকতার সাথে ডাকে। কাজেই শুধু মুখের ধোয়ায় সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। 

বরং আপনাকে হৃদয় খুলে দোয়া করতে হবে। ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা মিশে যাবে এই ধরনের দোয়া আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। তিরমিজি শরীফের হাদিস অনুযায়ী বলা হয়েছে, দোয়া ইবাদতের মূল। কুরআনে আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। এই কথাটি সূরা গাফিরের ৬০ নং আয়াতে আছে। 

ইচ্ছা শক্তি বৃদ্ধি করুন

মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ইচ্ছাশক্তি বা উইলিং পাওয়ার। মাঝে মাঝে আমাদের স্বপ্ন ও দায়িত্ব সামনে থাকলেও শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তির অভাবে আমরা সেটি পূরণ করতে পারি না। কিন্তু ইসলাম, মনোবিজ্ঞান এবং জীবন দর্শন সব জায়গাতেই ইচ্ছা শক্তির উন্নয়নকে সাফল্যের মূল ভিত্তি বলা হয়েছে। ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে চিন্তা থেকে কর্মের কোন কাজ রূপান্তর করা সম্ভব নয়। এবং প্রলোভন প্রতিরোধে সাহায্য করেছে থাকে ইচ্ছাশক্তি। 

যেমন পাপ থেকে বাঁচা বা খারাপ অভ্যাস ছাড়তে ইচ্ছাশক্তির দরকার। আপনার ভালো কোন লক্ষ্য পূরণের জন্য ধৈর্য প্রয়োজন হয়। সেই ধৈর্য শেখায় ইচ্ছা শক্তি। যিনি নিজের ইচ্ছাকে কাজে লাগাতে পারেন তিনি নিজেকেও জয় করতে পারবেন। অর্থাৎ ইচ্ছাশক্তি আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। আপনি যদি নিয়মিত নামাজেও দোয়া পড়েন এবং ছোট লক্ষ্য ঠিক রাখেন তাহলে আপনার ইচ্ছা শক্তি বেড়ে যাবে। 

নিয়মিত কারীর তেলাওয়াত শুনুন 

নামাজের মনোযোগ আনা টিপস হল নিয়মিত কারীর তেলাওয়াত শোনা। নামাজে মনোযোগ আর আর অন্যতম আরেকটি সুন্দর উপায় এটি। আপনি যদি আল্লাহর কালাম শুনেন তাহলে আপনার হৃদয় নরম হয়ে যাবে এবং আপনার মন প্রশান্ত হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি দুনিয়াবী চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। যখন আপনি দক্ষ কারীদের মধুর তেলাওয়াত শুনবেন তখন এক ধরনের আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আপনার অন্তরে এনে দেবে। যেটি নামাজে একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করবে। কোরআন তেলোয়াত শোনার মাধ্যমে আমরা শুধু শব্দের সৌন্দর্য অনুভব করি না, 

বরং এর আয়াত গুলো অর্থ বোঝার চেষ্টা করতে পারি। যদি আপনি নিয়মিত কার্ডের তেলাওয়াত শোনার অভ্যাস করে থাকেন তাহলে নামাজের সময় যখন আপনি সেই আয়াতগুলো পড়বেন তখন একাকি মনোযোগী হতে পারবেন। কারণ আপনার কান ও মন আগে থেকেই সে আয়াতের সুর এবং অর্থের সাথে পরিচিত থাকবে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে কুরআন তেলাওয়াত মস্তিষ্কের প্রশান্তি আনে, মানসিক চাপ কমায় এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে। তাই মনোযোগ ধরে রাখার জন্য নিয়মিত কারীর তেলাওয়াত শুনুন। 

নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার 

প্রযুক্তি, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তির ব্যবহারে রয়েছে নানা সুবিধা। 
  • মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করুন : নামাজের সময়সূচী, উলুম ইসলামিক টপিক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত এপ্লিকেশন গুলো আমাদের জন্য কার্যকরী হতে পারে। এইসব অ্যাপ্লিকেশনগুলি নামাজের সঙ্গে সম্পর্কিত উপকরণ সরবরাহ করে, যা আমাদের মনোযোগ ও অঙ্গীকার বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। 
  • প্রার্থনার সময়সূচী : প্রার্থনার সময়সূচী ভুলে গেলে চলবে না। বিভিন্ন এপ্লিকেশন আমাদের নামাজের সময় সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেবে, যা আমাদের কৌশলে একটি আচরণ তৈরি করতে সহায়তা করে। 
  • ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়া : নামাজ পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধকরনে অধ্যাপক ও সম্রাটদের ভাষণগুলির প্রভাব খারাপ নয়। ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর ভক্তির অভিব্যক্তগুলি দেখে আমাদের অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি পাবে। 

লেখকের শেষ মন্তব্য : নামাজের মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস 

এই আর্টিকেলে নামাজের মনোযোগ বাড়ানোর ইসলামিক টিপস সম্পর্কে আজকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি সত্যিই নামাজে আপনার মনোযোগ ধরে রাখতে চান তাহলে আজকের গাইডলাইনগুলো আপনার খুব কাজে আসবে এবং সাহায্য করবে মনোযোগ ধরে রাখতে। আজকে দেওয়া আমাদের গাইডলাইনগুলো ভালো করে অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি নামাজে মনোযোগ ধরে রাখতে পারবেন এবং আল্লাহর নিকটবর্তী স্থান পেয়ে যাবেন। 

আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন, তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দেবেন। তারাও যেন পড়ে উপকৃত হতে পারে। ভিন্নধর্মী এসব সব আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। এতক্ষন মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহাফেজ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url