*/

কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা

কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা জানুন। সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম, প্রতিদিন লেবু খাওয়ার উপকারিতা, কতটুকু লেবুর রস প্রতিদিন খাওয়া উচিত ও অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের আর্টিকেলে।
কুসুম-গরম-পানিতে-লেবু-ও-মধু-খাওয়ার-৯টি-উপকারিতা

 
আমাদের অনেকেই প্রতিদিন লেবু পানি পান করার অভ্যাস আছে, কিন্তু অনেকে জানেন না এটি শরীরে ঠিক কিভাবে কাজ করে। তাই আজকের আলোচনায় থাকছে কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা সহজ যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত আলোচনা। 

পেজ সূচিপত্র : কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা 

কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা 

কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? হ্যাঁ, আপনার যদি কুসুম গরম মধু খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে বা নতুন করে খাওয়া শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। অনেক সময় চিকিৎসা করার সকালে খালি পেটে মধু খেতে বলেন। এর কারণ মধু আপনাকে তাৎক্ষণিক শক্তি দিবে এবং তা সারাদিন শরীরে থাকবে। এছাড়া যদি ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেয়ে নেন তাহলে আরামদায়ক ঘুম হয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। 

সেই সঙ্গে শরীর ও মন সতেজ থাকে। মধুকে প্রাকৃতিক ওষুধ বলা হয়। প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন বের করে ফেলতে পারে। অন্যদিকে, লেবুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা শরীরকে ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। খাবার হজমের সময় শরীর তৈরি হয় এবং শরীরের জন্য এটি ক্ষতিকর। তাই চিকিৎসকরা প্রতিদিন এক গ্লাস পানি, মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে বলেন। এটি খুবই চমকপ্রদ একটি মর্নিং ড্রিংক। যা খাওয়ার পরে শরীরের চর্বি গলে যায়। 

লেবু এবং মধু যখন কুসুম গরম পানির সাথে মেশানো হয় তখন এটি একটি ডেটক্স এ পরিণত হয়। চলুন কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক। 
  1. লেবুর রসের খনিজ এবং ভিটামিন খাবার হজম করতে সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খেলে পেট ফোলা, বুকে ব্যথা এবং পাকস্থলীতে জমে থাকা টক্সিন দূর হয়। 
  2. সকালের চা অথবা কফি খেলে যে পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায় তার থেকে দ্বিগুণ বেশি শক্তি পাওয়া যায় কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খেলে। 
  3. লেবুতে থাকা উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম হৃদ যন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।  
  4. সকালবেলা কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধুক মিশিয়ে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর দাঁত ব্রাশ করতে হবে। এতে করে মুখের ভিতর জীবাণু ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ চলে যাবে। 
  5. লেবুর প্রাকৃতিক সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে জমে থাকা পাথর গলাতে ও নতুন পাথর তৈরি করে রোধ করতে ভূমিকা রাখে। 
  6. লেবু পানি খেলে শরীরের ওজন কমে যায়। 
  7. লেবুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সর্দি কাশি ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। 
  8. লেবুর এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা, ত্বকের ক্ষয়ক্ষতি এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। পাশাপাশি অন্যান্য টক্সিন দূর করে। ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দেয়। 
  9. কোষ্ঠকাঠিন্যর চিকিৎসার যদি তাড়াতাড়ি উপশম পেতে চান তাহলে গরম পানিতে লেবু মধু খেতে পারেন। 
উপরে উল্লেখিত সবগুলো কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা। কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে, বিশেষজ্ঞরা বলেন - যাদের পেটে আলসার এবং এসিডিটির সমস্যা আছে তাদের এই পানিও না খাওয়াই ভালো। খালি পেটে মধু এবং লেবু পানি পান করলে পেটে জ্বালাপোড়া হতে পারে। যদি জ্বালাপোড়া হয় তাহলে বুঝতে হবে আলসার রয়েছে। এর কারনে জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং পরে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া কারো যদি টনসিলের সমস্যা থাকে তাহলে এই পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

মধু এবং লেবু মেশানো পানি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভাল না। ডায়াবেটিস রোগীদের সবসময় চিনি এবং মধু থেকে দূরে থাকতে হবে। যাদের বেরিয়াটিক সার্জারি করানো আছে অর্থাৎ ওজন কমানোর সার্জারি করানো আছে তাদের এই পানি খাওয়া উচিত না। কারণ অপারেশনের পর মধু বা চিনি খেলে ডাম্পিং সিনড্রোম হয়। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আশা করছি, কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণা পেয়েছেন এবং তাদের এটি এড়িয়ে চলার উচিত সেটাও বুঝতে পেরেছেন। 

খালি পেটে সকালে লেবু পানি খাওয়ার নিয়ম 

গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা যদি কুসুম গরম পানি সাথে সকালে খালি পেটে লেবুর রস মিশিয়ে খায় তবে এর মাধ্যমে আমরা প্রচুর বেনিফিট পাব। যেমন - আমাদের বডির মেটাবলিজম অনেক সক্রিয় হবে, প্রচুর পরিমাণে শারীরিক শক্তি বা এনার্জি পাওয়া যাবে। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি এবং মধুতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই দুটো উপাদানে একসাথে হয়ে একটি এনার্জিটি ড্রিঙ্ক তৈরি হয়। যে কোন খাবার খাওয়ার ওই কোন না কোন নিয়ম থাকে। আমরা আমাদের দেহের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য লেবু খেয়ে থাকি। লেবু কিভাবে খাওয়া উচিত, কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় সেটা আমাদের জানতে হবে। 
কুসুম গরম পানির সাথে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দ্বিগুণ উপকার পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাদের কিছুটা এক্সারসাইজ বা শরীর চর্চা ও হাটাহাটি করা উচিত। তারপর আমরা লেবু ও মধুর পানিটি খেতে খেতে পারি। এই পানিওটি তৈরি করতে একটি মাঝারি মাপের লেবু নিতে হবে। তারপর এটিকে রাউন্ড স্লাইস বা পাতলা ও গোল করে কেটে নিতে হবে। 

এরপর একটি গ্লাসে সেই লেবুর দুই থেকে তিনটি স্লাইস নিতে হবে। তারপর সেই ক্লাসে কুসুম গরম পানি ঢেলে দিতে হবে। এর সাথে এক চা চামচ মধু যুক্ত করতে হবে। মাত্রার অতিরিক্ত খাওয়া একেবারেই যাবেনা। এই পানিওটি সকালে পান করাই ভালো। তবে যাদের খালি পেটে এই পানীয়টি খেলে বিভিন্ন সমস্যা হয় তারা দিনের যেকোনো সময় খেতে পারবে। কিন্তু যাদের শরীরে একেবারেই খাপ খায় না তাদের এটি এড়িয়ে চলতে হবে। 

প্রতিদিন লেবু খাওয়ার উপকারিতা 

প্রতিদিন লেবু খাওয়ার উপকারিতা। প্রতিদিন লেবু খেলে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি চলুন জেনে নেই -
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে। এতে সর্দি, কাশি এবং ফ্লু প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। 
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে : লেবুতে রয়েছে দ্রবনীয় ফাইবার। যা আমাদের অন্ত্রের জন্য বেশ সহায়ক। লেবু অন্ত্রের গতিবেদি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হজমে সাহায্য করে। যার কারণে লেবু খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। 
  • দ্রুত ওজন কমায় : আপনার যদি লেবু পানিতে মধু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে আপনি বুঝবেন এটি কেবল খেতে সুস্বাদু নয় বরং লেবুতে থাকা ফাইভার আপনাকে দীর্ঘ সময় জন্য ক্ষুধা থেকে মুক্তি দিচ্ছে। যার ফলে বারবার খাবার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে 
  • পানির ধারণ ক্ষমতা কমাই : লেবুকে প্রাকৃতিক মূত্র বর্ধক বলা হয়। মানে লেবু আপনার শরীরকে অতিরিক্ত পানি থেকে মুক্তি দিবে এবং পিএইচ মাত্রার ভারসাম্য ঠিক থাকবে। যার ফলে শরীরে ফোলার সমস্যা হবে না। তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিয়মিত লেবু খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 
  • ত্বক ভালো রাখতে : লেবুতে এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি এজি নং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা আমাদের ত্বকে অতিরিক্ত উজ্জ্বলতা প্রদান করে। এটির শরীরের ফ্রি রেডিকেল কমাতে সহায়তা করে এবং প্রদাহের সাথে মোকাবেলা করে। 
আশা করছি, প্রতিদিন লেবুখার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণায় পেয়েছেন। আপনি যদি সঠিক ধারণা পেয়ে থাকেন তাহলে এখন থেকে নিয়মিত লেবু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে আপনি সুস্থ এবং স্বতেজ থাকতে পারবেন। 

অতিরিক্ত লেবু খেলে কি কি সমস্যা হয় 

আমরা জানি লেবু খুবই উপকারী একটি ফল। শরীরের যে কোন সমস্যার সমাধানে লেবু খুব ভালো ভূমিকা পালন করে। তবে আমরা এটাও জানি যে যেকোনো কিছু ভালো গুণ থাকার পাশাপাশি খারাপ গুণও থাকে। লেবুর ক্ষেত্রেও এই কথাটি সত্য। লেবুর যেমন উপকারিতা রয়েছে, ঠিক তেমনি ও অপকারিতা রয়েছে। আমাদের সামান্য ভুলের জন্য লেবুর মাধ্যমে আমরা অপকারিতা লাভ করতে পারি। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড থাকে। 

আমরা যদি প্রয়োজনের বেশি পরিমাণে লেবু বা লেবুর রস গ্রহণ করে থাকি তবে সেটি আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যাবে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে দুটি উপাদান বিদ্যামান থাকে। সেগুলো হলো ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড। এ সকল উপাদান গুলো অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন  - সাইটোফোটোডার্মাটাইটিস, রক্তে আয়রন বৃদ্ধি পাওয়া, ডিহাইড্রেশন, মাইগ্রেনের সমস্যা, পেট ফাঁপা বা পেট খারাপ হওয়া, এসিডিটি, মুখের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, ঘনঘন প্রস্রাব ইত্যাদি। 
  • মুখের ভিতরের সমস্যা : প্রথমত অতিরিক্ত লেবুর রস গ্রহণের ফলে আমাদের দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়। আমাদের দাঁতের এনামেল ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে এই সকল উপাদান গুলো ক্ষয় হতে শুরু করে। এছাড়াও সাইট্রিক এসিডের পরিমাণ বেশি হলে আমাদের দাঁতের উপর সাদা স্তর পড়ার মতো সমস্যা ও সৃষ্টি হয়। 
  • এসিডিটি বা বমি ভাব : ভিটামিন সি, সাইট্রিক এসিড আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। কিন্তু যে কোন কিছু অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে তার তো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবেই। অতিরিক্ত লেবুর রস গ্রহণের ফলে আমাদের পেটে অ্যাসিডিটি সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন - গ্যাস্ট্রিক, আলসার, বমি হওয়া ইত্যাদি। 
  • পেট খারাপ বা পেট ফাঁপা : অতিরিক্ত লেবুর রস খাওয়ার ফলে আমাদের পেটে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার ফলে আমাদের পেট ফেটে যায় এর কারনে বদহজম বা পেট খারাপ হয়ে থাকে। 
  • মাইগ্রেনের সমস্যা : বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে, যে কোন সাইট্রিক এসিডযুক্ত ফল অর্থাৎ সাইট্রাস ফল বা লেবুর রস অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে বা যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদের সমস্যাটি বেড়ে যেতে পারে। সাইট্রিক এসিডে থাকা টাই রামাইন আমাকে একটি উপাদানের কারণে এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। 
  • সাইটো ফটো ডার্মাটাইটিস : অনেক সময় অতিরিক্ত লেবুর রস গ্রহনের পর অনেকের ক্ষেত্রে রোদে বের হলে শরীরে এলার্জি জাতীয় লালচের রেশ বের হয়। আবার কখনো কখনো কালো কালো ছোপ দেখা যায়। একে সাইটো ফটোডার্মাটাইটিস বলা হয়ে থাকে।
  • ডিহাইড্রেশন : আমাদের শরীরকে গরমকালে ঠান্ডা রাখতে আমরা লেবুর রস বা লেবু পানি খেয়ে থাকি। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে। তবে যদি এইভাবে আমরা অতিরিক্ত লেবুর রস বা লেবু পানি গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিবে। যা আমাদের ঘনঘন প্রস্রাবের চাপ সৃষ্টি করে। হলে আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা সৃষ্টি হয়। 

প্রতিদিন কতটুকু লেবুর রস খাওয়া উচিত 

আমরা সবাই জানি যে লেবু আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। এটি ভিটামিন সি তে ভরপুর একটি ফল। বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে খুবই ভালো কাজ করে থাকে এই লেবু। তাই আমরা অনেকেই লেবুকে বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। কেউ লেবুর রস করে, আবার কেউ গরম পানির সাথে, আবার কেউ লেবুর রসের সাথে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে, তবে আমরা কি জানি যে প্রতিদিন কতটুকু লেবুর রস খেতে হয়। 

বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা যাক - কোন কোন জায়গায় থাকে যে, আমরা প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিনটি লেবু বা লেবুর রস যাই বলি না কেন খেতে পারব। দুই থেকে তিনটি লেবুর রসের পরিমাণ প্রায় তিন থেকে ছয় টেবিল চামচ। এতে ৫৫ থেকে ৭৫ মিলি পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। আবার কোথাও কথা বলা হয়ে থাকে, একজন ব্যক্তি সাধারণত দিনে একটি লেবুর অর্ধেক রস অথবা একটি পুরো লেবুর রস খেতে পারবে। 

এতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ থাকে ১৫ থেকে ৩০ মিলি এর মত। এটি প্রায় ১ থেকে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস হতে পারে তবে বিশেষ করে জানিয়ে থাকেন যে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে প্রতিদিন প্রায় ৯০ মিলি পরিমাণ ভিটামিন সি গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর ক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রায় ৭৫ মিঃ ভিটামিন সি গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা গুলোও জেনে নেই - 

  • হজম শক্তি বাড়ায় : খালি পেটে মধু খাওয়ায় পাচনতন্ত্র সক্রিয় হয় এবং পাচন রস নিঃসরণ বাড়ে। 
  • লিভার পরিষ্কার করে : মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। 
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : মধুর হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংসের কার্যকর। 
  • ওজন কমাতে সহায়ক : খালি পেটে মধু খেলে মেটাবলিজম বাড়ে, ফলে ক্যালরি বার্ন হয়।
  • গলা ও শ্বাসতন্ত্র পরিষ্কার করে : শুষ্ক কাশি গলার খুসখুস ও টনসিলের জন্য কার্যকর। মধু শ্বাসনালীতে জমে থাকা স্লেশা পরিষ্কার করে। 
  • মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় : মধুর গ্লুকোজ সরাসরি ব্রেন ফুয়েল হিসেবে কাজ করে। স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমায়। 
  • গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের উপশমের কার্যকর : খালি পেটে মধু খেলে পাকস্থলীর পি এইচ ব্যালেন্স থাকে এবং গ্যাস্ট্রিক এসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে। 
  • ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে : ভেতর থেকে টক্সিন দূর করায় তোকে ব্রণ বা ফুসকুড়ি কম হয় এবং ত্বক হয় ঝকঝকে ও উজ্জ্বল। 

খালি পেটে মধু খাওয়ার সঠিক নিয়ম

খালি পেটে মধু খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। চলুন তাহলে আমরা জেনে নেই খালি পেটে মধু খাওয়ার সঠিক নিয়ম। 

  • পরিমাণ : এক চা চামচ মধু। 
  • কোন সময় : সকালে ঘুম থেকে উঠে 
  • কিভাবে খেতে হয় : কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খাবার সবচেয়ে ভালো। 

লেখকের শেষ মন্তব্য : কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা 

আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি জুড়ে আমরা কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার ৯টি উপকারিতা, সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাবার নিয়ম, প্রতিদিন লেবু খাবার উপকারিতা, খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা, ওদেরকে লেবু খেলে কি কি সমস্যা হয় সহ যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি আপনার প্রয়োজনে তথ্যটি পেয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। 

আপনি যদি আজকের আর্টিকেল থেকে সামান্যতম উপকৃত হন তাহলে বন্ধুদের মাঝে এবং পরিবারের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। যাতে তারাও পড়ে উপকৃত হয়। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আজকে এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ🥰

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url