*/

ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন সহজ উপায়ে

ফ্রিল্যান্সিং কি, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? আজকে আর্টিকেলে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, কাজ পাওয়ার উপায়, সুবিধা ও আয়ের গাইডলাইন সহ নতুনদের জন্য সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সিং গাইড বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। 

ফ্রিল্যান্সিং-কি-কিভাবে-ফ্রিল্যান্সিং-শুরু-করবেন


বর্তমানে, বিশেষ করে শিক্ষিত তরুণদের মাঝে, সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশা গুলোর একটি হচ্ছে ফিনান্সিং। এর বহুবিধ সুবিধা ও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকার কারণে এটি অনেক বেশি জনপ্রিয়। আজকের আর্টিকেলে ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের সম্পূর্ণ গাইডলাইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। 

পেজ সূচিপত্র : ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? 

ফ্রিল্যান্সিং কি

ফ্রিল্যান্সিং মূলত এমন একটি পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটি সাধারণত চাকরির মতোই, কিন্তু ভিন্নতা হলো এখানে আপনি আপনার স্বাধীন মত কাজ করতে পারবেন। দেখা গেল আপনার এখন কাজ করতে ইচ্ছা করছে না, আপনি করবেন না। যখন ইচ্ছা করবে তখন আবার চাইলেই করতে পারবেন। ধরাবাঁধা কোন অফিস টাইম নেই। এর পরে এখানে আপনার নির্দিষ্ট কোন ইমপ্লয়ার নেই। যখন যে বায়ারের কাজ নিবেন তখন সেই আপনার ইমপ্লয়ার। 

সাধারণ চাকরি থেকে এখানে আরেকটি বিষয়ের ভিন্নতা আছে, সেটি হলো কাজের স্থান। ফ্রিল্যান্সিং এর নির্দিষ্ট কোন অফিস নেই। মূলত আপনার বাড়ি হচ্ছে আপনার অফিস। এখানে বসেই আপনি বিভিন্ন দেশের বায়ারদের সাথে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে খুব সহজেই সরকারি বেসরকারি অনেক চাকরির থেকে বেশি বেতনে কাজ করতে পারবেন, আপনার যদি যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষতা থাকে। এটা আমরা সবাই জানি যে, আমাদের দেশে দক্ষতার কদর হয়না সেভাবে, কিন্তু বাইরের দেশগুলোতে হয়। আপনি সেসব দেশের বাইরেরদের সাথে কাজ করে বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ/তিনগুণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন অনেকেই জানতে চাই। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হবে। চলুন ধাপ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। 
  • পরিকল্পনা : 
বুদ্ধিমানেরা কোন কাজ শুরু করার আগে পরিকল্পনা করে নেই। ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আমাদের একটি বুলেট-প্রুফ পরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে হবে। পরিকল্পনা সাজানোর সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে অনলাইনে সহজ এবং কঠিন উভয় কাজ পাওয়া যায়। এখানে কোন কাজ একঘন্টায় শেষ করা যায় আবার কোন কাজ করতে ১৫ দিন লাগে। 

অনলাইনের প্রতিটি কাজের মধ্যে আপনাকে এমন কাজ নির্বাচন করতে হবে যা আগামী ১০ বা ২০ বছর পর্যন্ত থাকবে। কারণ শিখার পর যদি সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেখানে দেওয়া সময় সম্পূর্ণটাই নষ্ট হয়ে যাবে। মোটকথা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনি কি কি শিখবেন, কোথায় থেকে শিখবেন এবং কত সময়ের মধ্যে শিখবেন তা নির্ধারণ করে এগোতে হবে। 
  • কাজ শেখার আউটলাইন তৈরি 
আপনার পছন্দের টপিক নির্বাচন করার জন্য আপনাকে একটু পরিশ্রম করতে হবে। অনলাইনে পাওয়া যায় এমন প্রধান প্রধান কাজ গুলো সম্পর্কে সার্চ করে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এতে আপনি যে বিষয় বুঝেন সেই বিষয় নির্বাচন করতে সহজ হবে। স্মার্ট ক্যারিয়ার তৈরি করা যাবে দেখে লোভে পড়ে কোন টপিক নির্বাচন করা যাবে না। কারণ উক্ত বিষয় শিখতে গেলে তখন মাঝপথে ইন্টারেস্ট কমে যাবে এবং শেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। 

যাই হোক, আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করা হয়ে গেলে একটি প্রপার গাইডলাইন তৈরি করে নিতে হবে। কাজ শেখার জন্য আউটলাইন তৈরি করলে সেই অনুযায়ী কাজ শেখা অনেক সহজ আর দ্রুত হয়। গাইডলাইন থাকার কারণে রুটিন থেকে কখনো অন্য বিষয় সময় নষ্ট হয় না। এতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেখা যায়। 
  • প্রজেক্ট তৈরি 
পর্যাপ্ত সময় নিয়ে কাজ শেখার পরে কাজ হলো কিছু বাস্তব ধর্মী প্রজেক্ট তৈরি করা। এই প্রজেক্ট গুলো একাধারে আপনার স্কিল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং আপনার পোর্টফোলিও স্ট্রং করবে। প্রজেক্ট তৈরি করার জন্য আপনি গুগল থেকে আইডিয়া নিতে পারেন অথবা কোন ভার্সিটি প্রজেক্ট করতে পারেন। 

অন্যদিকে, কাজের গতি বৃদ্ধি করার জন্য ফেসবুক থেকে আপনার শেখা বিষয়ের উপর এক এক্সপার্ট এমন কারো সাথে ফ্রিতে কাজ করুন। এতে কাজের অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং সরাসরি ক্লাইন্টের সাথে কাজ করার কনফিডেন্স পাবেন। সমস্যার সমাধানের জন্য প্রপার রিসার্চ করার বিষয়ে রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 
  • পোর্টফোলিও তৈরি 
কাজ শেখা শেষ করে যখন প্রজেক্ট করা হয় তখন পোর্টফোলিও এর প্রয়োজন পড়ে। পোর্টফোলিও হলো আপনার অভিজ্ঞতার প্রমাণ। আপনার পোর্টফোলিও তে যত কাজের প্রমাণ এবং অভিজ্ঞতা থাকবে তত তাড়াতাড়ি অনলাইনে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। অল্প কিছু অর্থ ব্যয় করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে তা পোর্টফোলিও হিসেবে রাখলে অন্যান্য ফ্রিল্যান্সার থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারবেন। 
  • মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট তৈরি 
উপরের সকল কাজ ঠিকভাবে করার পর আপনি এখন অনলাইনে ইনকাম করার জন্য রেডি। শুরুতে কাজ পাওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন ফাইবারে একাউন্ট তৈরি করতে হবে। 

বিশেষ করে মার্কেটপ্লেসে সব সময় অ্যাক্টিভ থেকে কাজের জন্য এপ্লাই করতে হবে। বর্তমানে ফাইবার নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অনেক সহজে ক্লায়েন্ট খোজার সুবিধা দিয়েছে। এখানে গিগ খুলে নিজের কাজের পারদর্শিতা অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে ক্লাইন্ট নিজেই কাজের অফার দেয়। 
  • পেমেন্ট সিস্টেম 
পেমেন্ট একাউন্ট সেটআপ করা যতটা সহজ মনে করা হয় আসলেই ততটা সহজ। বাংলাদেশে পেপার না থাকায় সকল ফ্রিল্যান্সার গুলো পেওনিয়ার, ওয়াইজ, ডিরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার মেথড ব্যবহার করে। মার্কেটপ্লেসে যখন আপনি কাজ সাবমিট করবেন উল্লেখিত পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিয়ে আসতে হবে। 

মোটকথা অনলাইন থেকে আপনি যা যা ইনকাম করবেন তা পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে দেশে নিয়ে আসতে হবে। এ কারণে সর্বশেষ ধাপ হিসেবে পেমেন্ট নেওয়া যাবে এমন ওয়েবসাইট বা সার্ভিস একাউন্ট তৈরি করতে হবে। 

উপরে উল্লেখিত ধাপ গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলভাবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় প্রবেশ করা যাবে। অন্যথায় ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে উল্টো সময় নষ্ট হবে। 

ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি দক্ষতা লাগবে 

অনেকেরই কনফিউশন থাকে যে আসলেই কি আমি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবো। কি কি জিনিস দরকার এই কাজের জন্য? আসলে সত্যি কথা বলতে তেমন কিছুই লাগবে না আপনাকে এই পেশা শুরু করার জন্য। প্রথম যে জিনিসটা আপনার লাগবে সেটি হলো ইচ্ছে শক্তি ও ধর্য্য। এগুলো থাকলেই আপনি এই সেক্টরে নিমিষেই সফল হবেন। 
এর পাশাপাশি আপনার দরকার হবে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগের দক্ষতা এবং কাজ চালানোর মতো ইংরেজি জানা। ইন্টারনেট সম্পর্কিত ভালো ধারণা ও google এবং youtube থেকে বিভিন্ন রিসার্চ খুঁজে বের করার দক্ষতা এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সহায়তা করবে। এই ছিল মূলত প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি যা আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য যোগ্য করে তুলবে। 

নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে পারে 

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য ইন্টারনেট এই আছে। আপনি গুগল কিংবা ইউটিউব কিছুটা ঘাঁটাঘাটি করলে এই বিষয়ে আরো জানতে পারবেন। তাছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন প্রফেশনাল মানের অনলাইন শুরু করে অনেক ভালো ভালো ট্রেনিং সেন্টার ও রয়েছে। যেখানে আপনি ট্রেনিং করে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। 

তবে একটি বিষয়ে অবশ্যই চিন্তা করা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং এমন কোন পেশা নয় যেখানে আপনি একমাস কাজ করলেই খুব ভালো আয় করতে পারবেন। আপনাকে ধৈর্য সহকারে কাজ করে যেতে হবে। পথটা কষ্টকর হলেও আপনার ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল থাকলে এটি কোন সমস্যা হবে না আপনার জন্য। 

কিভাবে শিখবেন ফ্রিল্যান্সিং 

এই বিষয়টিতে অনেকেই ভুল করে থাকেন। বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি। তরুণ আপনি আপনার একাডেমিক পড়াশোনা করে একটি ব্যাংকে ব্যাংকার হিসেবে যোগদান করলেন। অন্যদিকে আপনার ঐ আরেকজন বন্ধু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে একাউন্টেন্ট হিসেবে যোগদান করলো। যদি বলা হয়, আপনারা দুজনেই চাকরিজীবী, এটি মিথ্যা হবে না। আবার যদি বলা হয়, আপনি একজন ব্যাংকার এবং আপনার বন্ধু একজন একাউন্টেন্ট, এটিও মিথ্যা হবে না। 
  
উপরের দুটি কথা একদম নির্ভুল ও নির্ভেজাল খাঁটি সত্য কথা। আসলে বিষয়টি হচ্ছে আপনাদের দুজনের পদবী ভিন্ন হলেও আপনারা দুজনেই চাকরিজীবী। ফ্রিল্যান্সিং জগতে কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইনার, কেউ ওয়েব ডিজাইনার, আবার কেউ ডিজিটাল মার্কেটটার হিসেবে কাজ করছেন। প্রত্যেকের কাজ ও পদবী আলাদা হলেও সবাই একজন ফ্রিল্যান্সার।

এখন আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি যে কিভাবে চাকরি করা শেখা যায় - এর কি কোন সদুত্তর আপনার কাছে আছে? নিশ্চয়ই নেই। একই রকম ভাবে ফ্রিল্যান্সিং আসলে শেখার মত কিছু নেই। 

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ কিভাবে পাবেন 

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। একটা বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে অনেক অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। একজন ক্লায়েন্ট কেন আপনাকেই কাজটি দিবে? তার জন্য আপনাকে অবশ্যই খুবই ভালো মানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভালো থাকতে হবে। 

তাছাড়া আপনাকে যে কাজটির জন্য ক্লাইন্ট পেমেন্ট করবে সেই কাজটিরও আপনাকে অত্যন্ত ভালোভাবে সুসম্পন্ন করতে হবে। মনে রাখবেন, বায়ারের সাথে যত ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার তত বেশি সুন্দর হবে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন প্রতিটি বাইরের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার। 

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ 

ফ্রিল্যান্সিং কাজের মূল উপকরণ হচ্ছে কম্পিউটার। বলা হয়ে থাকে, কম্পিউটার দিয়ে কি কি কাজ করা সম্ভব তা কেবল মানুষের বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সীমাবদ্ধ। কম্পিউটারের ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং কাজের ধরনের পরিবর্তন আসছে এবং এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুরুর দিকে ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল ওয়েবসাইট ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। বর্তমানে এদের জনপ্রিয়তা থাকলেও এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরো অনেক ধরনের কাজ। নিজে কয়েকটি জনপ্রিয় ও চাহিদা পূর্ণ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ উল্লেখ করা হলো -
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট 
  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট 
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন 
  • ডিজিটাল মার্কেটিং 
  • এপিআই ডেভলপমেন্ট 
  • ভিডিও এডিটিং 
  • কন্টেন্ট রাইটিং 
  • ডাটা এন্ট্রি 
  • একাউন্টিং

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা সমূহ 

ফ্রিল্যান্সিং এর নানাবিধ সুবিধা রয়েছে। প্রচলিত চাকরি বা ব্যবসায়ের তুলনায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেসব সুবিধা পাওয়া যায় তার কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো -
  • ফ্লেক্সিবিলিটি : ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের সুবিধা জনক যে কোন জায়গা থেকে কাজ করতে পারে। এছাড়াও তারা নিজের কাজের সময় নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারে। অর্থাৎ চাকরির মতো নয় টা থেকে ৯ টা থেকে ৫ টা একই অফিসে কাজ করতে হয় না। 
  • কাজ-জীবনের ভারসাম্য : এই পেশাজীবীদের নিজেদের সুবিধা জনক মত কাজের চাপ নেওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। চাকরি-ব্যবসায়ের মতো অতিরিক্ত কাজের চাপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। কাজের বাইরে বাকি সময়টা নিজের ও পরিবার, বন্ধু-বান্ধবের সাথে উপভোগ করা যায়। 
  • আয় নিয়ন্ত্রণ : যেহেতু একজন ফ্রিল্যান্সার একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করে থাকে, সে তো তার আয়ের উৎস কে বহুমুখী করতে পারে। এতে একজন ক্লায়েন্টের কাজ হারালে বাকিদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। আবার ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের কাজের পারিশ্রমিক নিজেরা নির্ধারণ করতে পারে। 
  • নেটওয়ার্কিং সুবিধা : একজন ফ্রিল্যান্সার একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করতে পারে। এর ফলে সে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক তৈরির সুযোগ পায়। পরবর্তীতে কোন প্রয়োজনে তাদের থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। 
  • কাযের স্বাধীনতা : একজন ফ্রিল্যান্সার কোন প্রজেক্টে কাজ করবে, কার সাথে কাজ করবে, কার সাথে কাজ করবে না এই ধরনের সিদ্ধান্ত সে একক ভাবে নিতে পারে। এক্ষেত্রে কাজের ব্যাপক স্বাধীনতা ভোগ করা যায়। 
এর বাইরেও আরো অনেক সুবিধা রয়েছে। তবে এর কিছু অসুবিধা আছে। যেমন : প্রতারক ক্লায়েন্ট,অবসর পরবর্তী আয় না থাকা, সমস্ত কাজ নিজে করা, কম্পিউটার সহ অন্যান্য প্রযুক্তি নিজে ক্রয় করা, অধিক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। 

একজন ফ্রিল্যান্সার এবং সাধারণ চাকরিজীবের মধ্যে পার্থক্য 

চলুন এবার জেনে নেই যে একজন ফ্রিল্যান্সার এবং একজন সাধারন ইমপ্লয়েড বা চাকরিজীবীর মধ্যে কি কি পার্থক্য থাকে। 
  1. কর্মসংস্থানের অবস্থা : একজন ফ্রিল্যান্সার হলো স্বনির্ভর পেশাজীবী বা সেলফ এমপ্লয়েড। যে এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠান ও ক্লাইন্টের জন্য কাজ করতে পারে। অন্যদিকে একজন চাকুরীজীবীকে নির্দিষ্ট কোন ক্লাইন্ট বা প্রতিষ্ঠানের অধীনেই কাজ করতে হয়। 
  2. কাজের সময় : ফ্রিল্যান্সিং জবের ক্ষেত্রে সময়ের কোন বাধ্যবাধকতা নেই অর্থাৎ নমনীয় কাজের সময়। অন্যদিকে সাধারণ পেশাতে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত কাদের সময় অনুসরণ করতে হয় বা করা বাধ্যতামূলক। 
  3. নিয়ন্ত্রণ : একজন ফ্রিল্যান্সারের তার কাজের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের পেশাদারের তার কাজের প্রতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে না। 
  4. কাজের স্থান : ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে রিমোট ওয়ার্কিং করা সম্ভব। কিন্তু একজন সাধারণ চাকরিজীবীকে তার প্রতিষ্ঠানের অফিসে বসেই কাজ করতে হয়। 
  5. কাজের রেট বা বেতন নির্ধারণ : তার কাজের জন্য রেট বা ফি নিজে নির্ধারণ করতে পারেন। আর একজন সাধারণ চাকরিজীবীকে তার পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট বেতনেই কাজ করতে হয়। 
  6. বেকারত্ব : একজন ফ্রিল্যান্সারের কাজ চলে যাওয়া বা কাছ থেকে বরখাস্ত করার বিষয়টি থাকে না। কিন্তু সাধারণ পেশাদারীতে কাজ চলে যাওয়া বা কাজ থেকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি থাকে। 

ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা 

ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে। চলুন দেখে নেই এর অসুবিধা গুলো। 
  • ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে কোমর, ঘাড় সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। 
  • কম্পিউটারের সামনে একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্সারদের চোখের সমস্যা দেখা যায়। 
  • এক্ষেত্রে সব কাজ বাসায় বসে করতে হয়। এর ফলে একাকিত্বের মাধ্যমে মানুষ অবসাদগ্রস্ত হয়ে যায় যেটি পরবর্তীতে বড় রূপ ধারণ করতে পারে। 
  • প্রায়শই ঘুমের নানা রকম সমস্যা সম্মুখীন হন ফ্রিল্যান্সাররা। কারণ দেখা যায় আমাদের দেশে যখন রাত, ক্লায়েন্টের দেশে তখন দিন। 
  • বাইরে তেমন বের না হওয়ার কারণে রোদের স্পর্শ না পায় না এই পেশার লোকজন। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাব হওয়াটা ব্যতিক্রম কিছু না। 

লেখকের শেষ মন্তব্য : ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? 

এই ছিল মূলত ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? সহ যাবতীয় বিস্তারিত আলোচনা। প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো-মন্দ উভয় দিক থাকে। এক্ষেত্রেও ভালো মন্দ উভয় দিক বিদ্যাবান যা আমরা আলোচনা করেছি বিস্তারিতভাবে। এখানে একটু নিয়ম মেনে চললে ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা গুলোকে খুব সহজে এড়িয়ে চলা যায়।

আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন। তাহলে বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবার পরিজনের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। আশা করছি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত যা খুঁজছিলেন সবকিছু এই আর্টিকেলটিতে পেয়ে গিয়েছেন। এখন সময় এসেছে কাজ করার। যদি আপনার আরো কিছু জানার থাকে, সেক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাক্ষোমা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url